অপরূপা পুরুলিয়া অযোধ্যা পাহাড় ঘুরে—পর্ব -(১)

অপরূপা পুরুলিয়া অযোধ্যা পাহাড় ঘুরে—পর্ব -(১)

বসন্তের রেশ ধরে চৈতী পলাশ
পুরুলিয়া না গেলে মেটেনা সে আশ

হাওড়া- চক্রধরপুর ট্রেন( রাত ১২-৫) ধরে পরদিন ২৫ শে মার্চ (২০২২) পৌঁছে গেলাম পুরুলিয়া স্টেশানে।
আমাদের আগে থেকে ঠিক করা গাড়ি ছিল স্টেশানে। আমাদের হোটেল বুক ছিল অযোধ্যা পাহাড়ের টপে।গাইড Sukhen Paramanik এর কথায় ওখানে আগে গিয়ে বিশ্রাম নিয়ে বেরোলে অনেকটা সময় নষ্ট হবে, তাই ওই একটা লজ ঠিক করে দিল ঘন্টাখানেকের জন্য একদম স্টেশানের গায়ে ফ্রেশ হয়ে নিতে।
নির্দিষ্ট গন্তব্য স্হলের দিকে এগোতে এগোতে আমাদের গাড়ি প্রথমেই দাঁড়ালো অযোধ্যা যাবার পথে — টামনা পার হয়ে বরাকডি পলাশবনে।


★★পলাশবন—
চারিদিক লালে লালে ছেয়ে গেছে। যতোদূর চোখ যায় শুধুই পলাশ।
এতো রূপ, এতো সৌন্দর্য তাই বোধহয় সে রূপঅহঙ্কারী। মাত্র কয়েকদিন থেকে ঝরে যায়।
” কিংশুক ফুল হিংসুক ভারি
আজ করে ভাব কাল করে আড়ি
মন তার বোঝা যায়না”—-

আদিবাসী শিশুরা মাটিতে পরে থাকা পলাশ নিয়ে মালা গেঁথে বিক্রি করছে মাত্র দশ টাকায়। কোন জবরদস্তি না। নিলে নাও না নিলে নিওনা। আপন মনে ওরা মালা গাঁথতে ব্যাস্ত।
মুঠোফোনে বন্দী করলাম কিছু পলাশ মুহূর্ত যা আজীবনকালের স্মৃতিতে সঞ্চিত হয়ে থাকবে—-

★★কেঁদ গাছ
মুরগুমা থেকে হিলটপ যাওয়ার পথে আমাদের গাড়ি হঠাৎই দাঁড়িয়ে পড়লো কেঁদ গাছ দেখে।
শুনেছি এতোদিন কেঁদ সম্বন্ধে।
আজ দেখে চোখ সার্থক হলো।
ছোটছোট বাচ্চারা মনের আনন্দে গাছের তলায় খেলা করছিল।
আমিও সামিল হলাম ওদের সাথে।
কুড়ালাম ফল—-
এই ফলে প্রচুর পরিমানে শর্করা, প্রোটিন, ফাইবার এবং ভিটামিন সি সমৃদ্ধ বি-ক্যারোটিন, টের্পেনয়েডস,স্যাপোনিন এবং ট্যানিন থাকে | কেন্দুল পাতা থেকে বিড়ি তৈরী হয় |
পুরুলিয়ার এক বিশেষ সম্পদ এই কেঁদ ফল—
এ রাস্তা দিয়ে যাবার পথে আপনার guide কেও বলুন কেঁদ ফলের সাথে চোখের দেখা করিয়ে দিতে।
এ প্রকৃতি, এ গাছ আর এ শিশুরা পুরুলিয়ার সম্পদ যে!!!!


★★ মার্বেল লেক
লাল সবুজ সাদা কালো পাথরে
আদর জড়িয়ে মার্বেললেক আখরে—

হঠাৎ করে মনে হলো আমি কি সেই আদিম প্রস্তর যুগের পাথরের দেখা পেলাম? রঙিন পাথরে পাথরে এ এক অপুর্ব জায়গা—-

পৃথিবীর চতুর্থ সর্ববৃহৎ জলবিদ্যুৎ প্রকল্প পুরুলিয়া পাম্প স্টোরেজ প্রোজেক্টের কাজের জন্য বিস্ফোরণ করে পাথর ভাঙতে গিয়ে সেই পাথরের খাঁজে এই লেকটি তৈরি হয়৷
এর চেহারা দেখে অনেকেই তুলনা করছেন আমেরিকা-কানাডা সীমান্তে ‘গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন’-এর সঙ্গে৷
গভীর খাদে নীল জল আর পাথরের খাঁজ। তার পাশে যতোদূর চোখ যায় পাহাড়ে ঘন সবুজ জঙ্গল।
চোখ সার্থক হলো এ মার্বেল লেক দেখে।

( পুরুলিয়ার এ গাছগাছালি, পাহাড়,ঝর্না — সব কিছুর সাথে পুঙ্খানুপুঙ্খ পরিচয় করিয়ে দিয়েছে আমার পুরুলিয়ার ভাই Sukhen Paramanik)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *