**জীবন** শান্তালতা বিশই সাহা
**জীবন**
শান্তালতা বিশই সাহা
জীবন…,
আমায় আগল খুলে মুক্তি দে
একটা দিন।
জীবনের ষাঠটি বসন্ত পেরিয়ে
এখন একাকীত্বের পান্থশালায়, চাই-
ক্ষণিকের বিশ্রাম।
হৃদয়ের রুক্ষ বালুচরে
অতীতের সাথে নিত্য ছোঁয়াছোঁয়ি খেলে,
কল্লোলহীন নিঃসঙ্গতা কল্লোলিনী।
তারই সুখচ্ছলতায়
সভ্যতায় জড়ানো চণ্ডাল শরীরটাকে,
একটু সিক্ত করতে দিই।
বলতে পার জীবন?
এই মহাকাশের অন্ধকার দুনিয়ায়
ঐ চাঁদ কেমন করে একা একা থাকে!
কেমন করে আঁধারেও অপরকে বাঁচার
মুঠো মুঠো স্নিগ্ধ আলো দেয়?
ঐ রূপোলী চন্দ্রিমা!
আমি শিখতে চাই
একাকীত্বের ক্লাসরুমে সেই মহত্বের সহজ পাঠ।
……আচ্ছা জীবন
ওকে দেখেছিস কখনও?
…….নাম?
…….পান্থপাদপ,
ঐ পত্রধারের একাকীত্বের আনন্দেই
নিজের সঞ্জীবনী!
……..কেমন করে?
জীবনের রেসকোর্সে ছুটতে ছুটতে যখন হাঁপিয়ে উঠি,
শ্বাসকষ্টে যখন জীবন দূর্বিসহ,
তখন ও আমার পাশে এসে দাঁড়ায়।
……..কেমন করে পার?
আমি জানতে চাই।
আমি জানতে চাই-
একা একা অপাঙতেও থেকেও…..
কেমন করে মানুষের পাশে দাঁড়ানো যায়
মানুষের বিপদে।
……..জীবন?
একাকীত্বের নিঃশ্চুপ দরিয়ায়-,
এতো যে প্রাণ আছে
এতো যে কথা আছে
এতো যে সুখ আছে
বুঝিনি আগে।
সেই রহস্যময়ী সুখের
পুঙ্খানুপুঙ্খ সুখানুভূতির পরশ পেতে;
তৃষিত চকিত এ প্রাণ
সর্বক্ষণ অনুসন্ধিৎসু।
জরাজীর্ণ পৃথিবীর
বিবস্ত্র অবয়ব আজ অগোচরে থাক।
দুঃখ তো আছেই,
ব্যথার সাঁতার জানে
ঘেরা চোরাবালির চরে যে ঘর বেঁধেছি,
তা পাওয়া না পাওয়ার হিসেব চুকিয়ে-
জীবনের যাত্রাখাতায়; শিখে চলেছি
অনেককাল আগে থেকেই।
একা একা আপন দুনিয়ায়
গুড়ো গুড়ো অযুত আনন্দ পাওয়ায় লক্ষ্যে,
আমি এখন, নির্জন দ্বীপের একাকী অতিথি।
ভুলতে চাই সমাজের মেকী লৌকিকতা,
ডুব দিতে চাই ;
একাকীত্বের অলৌকিক মহাসাগরে স্বেচ্ছায়,
মহানন্দে।
হয়তো বাঁচার তাগিদে,
হয়তো নিজেকে নিজের মতো করে
পাওয়ার তাগিদে,
মুক্তি দে একটা দিন;
জীবন….।
—————-