গল্পের নাম : শুভ দোল পূর্ণিমা মালা মুখোপাধ্যায়

গল্পের নাম : শুভ দোল পূর্ণিমা

মালা মুখোপাধ্যায়

–আপ।আপের ট্রেন ব্যান্ডেল থেকে ছাড়ল।মাইকে ঘোষণা হতে থাকে।

জয়ী টোটো থেকে নামে, পয়সাটা দিয়েই টিকিট কাউন্টারের দিকে এগিয়ে যায়।
আবার ঘোষণা করা হয়, ব্যান্ডেল কাটোয়া বাশঁবেড়িয়া ছাড়ল।
জয়ী লাইনে দাঁড়িয়ে পড়ে। লাইন এগিয়ে যায়,জয়ীও এগিয়ে চলে।
আবার ঘোষণা করা হয়,ব্যান্ডেল কাটোয়া আপ ৩ নং প্লাটফর্মে ঢুকছে। ৩ নং প্লাটফর্মে ঢুকছে ব্যান্ডেল কাটোয়া ।

–দাদা একটা কাটোয়া উইথ রিটার্ন।
আচ্ছা ,রিটার্ন তো আগামীকাল রাত্রি ১২ টা পর্যন্ত ভ্যালিড?
–হ্যাঁ, যেহেতু আজ শনিবার,পরশু সোমবার রাত্রি বারোটা পর্যন্ত ভ্যালিড।
–তাই? বাঃ

টিকিট নিয়ে ব্যাগে রেখে তিন নম্বর প্লাটফর্মের দিকে ওভারব্রিজ পার হয়ে ছুটে গিয়ে দাঁড়াতেই ট্রেন চলে আসে।লেডিসে যাওয়ার ইচ্ছে থাকলেও উঠতে পারে না জয়ী। সামনে যেটা এসে থামে সেটাতেই উঠে পড়ে। খুব ভিড় নেই।তবে চারদিকে চোখ ঘোরাতে ঘোরাতে দেখে সব ভর্তি। শুধু একটা জায়গা ফাঁকা আছে। সামনের চার পাঁচ জন কে সাইড করে, একরকম ওভার টেক করে গিয়ে বলে,একটু সরে সরে বসুন,হয়ে যাবে,একটু বসতে দিন প্লিজ।সবাই নড়েচড়ে চেপে চেপে একজনের জায়গা বার করে দেয়। জয়ী বসে পড়ে।কোলের উপরে ব্যাগ রেখে ,ব্যাগের ভিতর থেকে স্মার্ট ফোন অন করে। হোয়াইটস এ্যাপে যায়। বাড়িতে মেসেজ দিয়ে দেয়,ট্রেন পেয়ে গেছি, বসার জায়গা পেয়ে গেছি, খুব ভাগ্য ভালো , ছুটে এসে তাও পেলাম।
–রিটার্ন কেটেছো?
–হ্যাঁ, সোনা। কালকেই ফিরছি। এখন রাখি।
–বাই।
একটু নড়েচড়ে বসতে বসতে দেখে, মোটামুটিভাবে সকলেই মাস্ক পরেছে,তবে কেউ নাক খুলে রেখেছে,কেউ কেউ নাক মুখ দুটোই খুলে রেখেছে, শুধু দু’কানে দড়ি বাঁধা,থুতুনির সঙ্গে আঁটা,যে যে জায়গায় মাস্ক ছাড়া যেতে দেয় না,বা দেবেই না,সেই সেই জায়গায় মাস্ক ঠিকমতো পরবে। নিজের জন্য নয়,ঐ গেটে যাতে না আটকা পরে,তাই।আর দু’ একজন মাস্ক রাখেই নি।আর জয়ীর মতো আর একজন নাকে ঠিক মতো মাস্ক নিয়ে বসে আছে,মাঝে মাঝে ব্যাগ থেকে স্যানিটাইজার নিচ্ছে আর ফোনে চোখ।
জয়ী ঘাড় কাত না করেই চোখ ঘুরিয়ে দেখে আনন্দ সেন,ছবিটা খুব চেনা চেনা লাগছে তো।

মূহুর্তের মধ্যে স্মৃতিতে নক্ করে, একেবারে গায়ে গা দিয়ে ভদ্রতা বাঁচিয়ে দু’জনে বসে আছে। খুব সহজেই চোখ যায়, আরে এ যে আনন্দ!এ যে আমার আনন্দ! কতদিন পর দেখা! তা প্রায় কুড়ি বছর পর দেখা। কুড়ি কুড়ি বছরের পর, একটু লোক লোক লাগছে, সেই হায়ার সেকেন্ডারির পর আর দেখা হয় নি,সূযোগ ছিল না। চিঠি দু’ একটা দিতে দিতে আর দেওয়া হয় নি।আউট অফ সাইট আউট অফ মাইন্ড।
আর আজ সেই আনন্দ। সেই একরকম বোকা থেকে গেল, আমার গলার স্বর শুনেও চিনতে পারল না।
হঠাৎ আনন্দ সেনকে সার্চ করে এফ আর(f r) পাঠিয়ে দেয়। দেখে কি যেন পড়ছে, কাগজ পড়ছে,ই পেপার, অনলাইন পেপার।জয়ী ভাবে কিছুতেই নিজে থেকে পরিচয় দেবো না,দেখা যাক কি করে?
প্রায় পাঁচ সাত মিনিট পর দেখে নটিফিকেশন আসে, আনন্দ সেন এ্যাকসেপ্টেড——
সঙ্গে সঙ্গে জয়ী পাঠিয়ে দেয় ,হাই,
ওদিকে তখন ঘাড় ঘুরিয়ে বলে, হোয়াট এ সারপ্রাইজ,কি খবর? কখন? কোথায় উঠলি? কোথায় যাচ্ছিস? একা?
–চিনতে পেরেছিস?
–বুঝতেই তো পারছিস।
–গলা শুনে চিনতে পারলি না?
–কেমন চেনা চেনা মনে হয়েছিল, কিন্তু আমি ভাবতেই পারি নি,তোর সঙ্গে দেখা হবে তা। আর যোগাযোগ রাখলি না কেন?
–একরকম থেকে গেলি। দাঁড়া একে একে বলি, আমি ত্রিবেণীতে উঠেছি। যাবো নিজের গাঁয়ে, আগামীকাল দোল, খুব ধুম ধাম করে মচ্ছব হয়, খিচুড়ি খেতে চললাম। আমি একা যাচ্ছি। বরের সময় নেই।
–ওয়াও,আমিও তো যাচ্ছি,মচ্ছব খেতে।
–তুই ও ?
– একদম। তোর গাঁ,আর আমার গাঁ তো একটাই। আমি প্রবাসে থাকলেও জানি সব।
–তোর সঙ্গে কাউকে দেখতে পাচ্ছি না?
–ওরা এই গরমে যাবে না।
–তা ঠিক। কী রোদের তেজ! নেহাৎ জন্মভূমির টান,তাই যাওয়া। আর কি মজা হচ্ছে বল, কোনোদিন ভেবেছি তোর সঙ্গে এই ভাবে দেখা হবে? এক ট্রেনে, পাশাপাশি সিটে। আবার একসঙ্গে এক জায়গায়, আবার আগের মতো দোল খেলবি?
–পাগল! শুধু দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখব। আর কি সে বয়স আছে! আমার ছেলেই খেলে না।
–ও হো,তোর ছেলে? কয় ছেলে? কত বড় হলো? আমার একটি মেয়ে ,তোর ছেলের থেকে ছোট হলে বিয়ে দেবো।
–হা হা হা হা —
–হাসছিস যে?
–আমরা দেবো ওদের বিয়ে? ওরা আমাদের কথা শুনবে? আমার ছেলে র বয়স এই পনেরো। মাধ্যমিক দেবে।একটিই ছেলে। অবিকল আমার মতো দেখতে হয়েছে।ওকে দেখলেই আমার ছোটবেলা মনে পড়ে যাই, আমি যেন আমার আমাকে দেখতে পাই।
–তাই? ছবি পাঠা,তোর বউ,তোর ছেলের। দেখি। আমারও তো একটিই মেয়ে। অবিকল আমার মতো দেখতে। আমার মেয়ে ১৪ বছরের। আমিও ওর মধ্যে নিজেকে দেখতে পাই। কী সাজতে ভালবাসে! দু’ চোখের কাজল কিছুতেই সমান না হলে মুছেই যাবে, আমি যেমন করতাম। খুব বাপ সোহাগী। আমাকে দেখতেই হয় না।
–তাই? ছবি দে।
–পাঠিয়ে দিয়েছি। দ্যাখ।
–ওদের আনলি না কেন?
–ওরা যাবে আমার গাঁয়ে ? বলবে সেই ধাপধরা গোবিন্দপুর। নেট নেই।তার থেকে এই ভালো,একা একা যাবো, গাঁয়ের সবার সঙ্গে দেখা করবো,চুটিয়ে আনন্দ করব। ঠাকুরতলায় বসে শালপাতায় খিচুড়ি খাবো,বড়ি দিয়ে তেঁতুলের আনাজের টক, এখনও জিভে চল চলে এলো।বাড়িতে কিছুতেই অত সুন্দর হয় না।
–ঠাকুরের মাহাত্ম্য।
–একদম তাই। আমাদের দু’জনকেই টেনেছে বল? একেবারে রেল গাড়ির কামরায় হঠাৎ দেখা।
–ভাবি নি সম্ভব হবে কোনোদিন।
–সত্যিই কি আমাদের যে দিন গেছে, একেবারেই গেছে?
–রাতের তারারা সব দিনের আলোর গভীরে।
–হা হা হা হা
এই দ্যাখ কাঁচা গোল্লা আসছে। এই জন্য এই ট্রেনে আসতে এতো ভালো লাগে। আনন্দ খাবি কিন্তু। কিছু হবে না, খুব সুন্দর টেস্ট। কী কায়দায় কাঁসার বগির উপরে সাজিয়ে কাপড় ঢাকা দিয়ে বিক্রি করে,ব্যালেন্স আছে।
সোমরাবাজারের বিখ্যাত কাঁচা গোল্লা
হাঁক দিতে দিতেই জয়ীর কাছে এসে দাঁড়ায় মিষ্টিওয়ালা।
জয়ী বলে দেয়, পাঁচটা করে দু’ জায়গায় দেবেন।
আনন্দের কোনো না না জয়ীর কানে যায় না,হাতের ইশারায় আনন্দকে থামিয়ে নিজেই টাকা দিয়ে দেয়। কোনো কথা না বাড়িয়ে বলে,খেয়ে নে, তোদের ওখানে এতো সুন্দর মিষ্টি পাবি না। থাকিস তো ব্যাঙ্গালোরে, সেখানে আবহাওয়া যতই ভালো হোক, এই গঙ্গা নদীর ধারে ধারে খাওয়ার যা সুখ, বিশেষতঃ এই ধর উত্তরপাড়া থেকে আজিমগঞ্জ, খুব সস্তা, খুব টাটকা,সব কিছু। যা না পুরুলিয়া বাঁকুড়ার দিকে,ট্রেনে এতো খাবার ওঠে? একদম না।
–আমি জানি। আমি মঙ্গল গ্রহের মানুষ না জয়ী। এরপরে কিন্তু ঝাল মুড়ি উঠলে আমি খাওয়াবো।
–শোধ দিবি?
–ও ভাবে বলছিস কেন?
–বলব তো, তুই ছেলে হয়ে খেতে ইগোতে লাগছে?
–ধ্যেৎ–
–ঠিক।
–ঠিক আছে যা, হাত গুটিয়ে থাকব। বড়লোক বর,বরের পয়সায় খাওয়া।
–হা হা হা হা, খুব বড়লোক। অনেক টাকা।
–সে তো তোকে দেখেই বুঝতে পারছি। খুব ভালো আছিস,তার প্রমাণ চলনে বলনে কথনে পাচ্ছি।
–আর তোর ? তোর ভুঁড়ি কি বলছে? যত টাকা তোর ভুঁড়ি বলছে।
–টাকা টাকে থাকে। ভুঁড়িতে থাকে খাবার। আমরা তো খেয়েই শেষ করলাম।
–তাই? তাহলে তো তোকে আরো খাওয়াবো। কাটোয়ার মিষ্টি, কাটোয়ার দই সব তোকে খাওয়াবো।যদিও নবদ্বীপের দই খুব বিখ্যাত।
–তুই কি পাগল হলি? তোর বাড়িতে গিয়ে খাবো। তোর হাতের রান্না।
–তাই? সে তো আরও ভালো। তোদের সবার নিমন্ত্রণ থাকল।
–আমি একা গেলে হবে না?
–ভয় দেখাচ্ছিস? যাবি। কতদিন সংসার করছি বল? আমার আবার ভয় কি? আমার বর খুব ভালো। সন্দেহ টন্দেহ বাতিক ফাতিক নেই।
–তোর আছে?
–মিথ্যে বলব না,প্রথম প্রথম ছিল। এখন নেই। অত বড় মেয়ের বাবা, আবার কি? এবার তো মেয়ের শাসনে থাকে।
–তাই বল,একটা পাহাড়াদার আছে।
–ধূর, তোর কথা বল।
–তোর মতো আমরাও ভালো, খুব ভালো আছি।
ট্রেন এগিয়ে চলে। হকার উঠছে নামছে। বেশ মজা। আবার আগের মতো। লক্ ডাউনে ট্রেনের কথা ভাবাই যেত না। জয়ী আর আনন্দ জানলার দিকে তাকিয়ে আছে।কত কথা ওদের জমে আছে,কত কথা বলতে ইচ্ছে করছে। কিন্তু একটা কথাও বের হচ্ছে না, তাকিয়ে থাকে বাইরের দিকে,দু’ দিকে জমি গুলো গোল হয়ে ঘুরতে ঘুরতে পিছিয়ে যায়,ট্রেন হু হু করে এগিয়ে যায়। আনন্দ আজ থেকে কুড়ি বছর পিছিয়ে যায়।জয়ী ওর বন্ধু। খুব কাছের বন্ধু। সবকথা , সবকিছু আমরা শেয়ার করতাম। স্কুলে গিয়ে গল্প হতো,পড়তে গিয়ে গল্প হতো। আর আজ ? আমরা দু’জনকে অনেক কিছু বললাম, কিন্তু সবকিছু বলতে পারলাম না। বলতে পারছি কোথায়? মনের মধ্যে তুই থাকিস সবসময় জানিস? তোর সঙ্গে কত কথা বলি, সংসারের সব কাজের মধ্যেও তোকে দেখতে পাই, আমার উচিত অনুচিত কিছুই জানি না,সবাইকে ভালোবাসি। আমার ছেলেকেও ভালোবাসি, কিন্তু তার ভিতর থেকে তোর মুখটা মনে পড়ে, আমাদের ঘর বাঁধা সম্ভব নয় ভেবেই তোকে কখনও বলি নি,জয়ী তোকে ভালোবাসি,তোকে দুর্বল করে দিয়ে আমার কি লাভ? তুই কতবার যে আমাকে বোকা,গাধা,বলেছিস,বলেছিস আমি কিছু বুঝি না,ওরে সব বুঝতাম,সব বুঝিও। এই যে আমরা এখন পাশাপাশি বসে যাচ্ছি, শুধুই পাশাপাশি বসে আছি, তবুও তোর কাছ থেকে একজন কর্তব্যপরায়ন গিন্নীর গন্ধ পাচ্ছি, একটা মা মা গন্ধ পাচ্ছি, কিন্তু সবকিছুর ভিতর থেকে আমি আমার সেই কিশোরী জয়ীর আবির মাখানো হাতের গন্ধও পাচ্ছি,তোকে খুঁজে পেয়েছি,তোর ফলোয়ারস আছি, তোকে জানতে দি নি, আমি জানি তো তুই এবার আমাদের গাঁয়ে দোলপূর্ণিমাতে যাবি,তাই আমিও যাচ্ছি,তবে এক কামরায় পাশাপাশি,এতোটা ভাবি নি,এটা হয়তো রাধা কৃষ্ণের উপহার।জয়ী তুই এখনও আগের মতোই আছিস, খুব সহজ সরল,কোনো জটিলতা তোকে গ্রাস করে নি, তুই কি জানিস,এখন আমি তোর কথা ভাবছি? তুইও কি আমার মতো আমাকে ভাবছিস? না বাইরের দৃশ্য দেখতে দেখতে যাচ্ছিস?

হঠাৎ নিরবতাকে টুকরো টুকরো করে দিয়ে বলে, আমাদের সেই রঙ খেলার কথা মনে আছে তোর? তুই তো আমার কপালে রঙ দিতে গিয়ে হাত কাঁপিয়ে একাকার, খুব ভিতু তুই। আমার অতটা ভয় ছিল না, এতক্ষণ না সেই আগের কথাই ভাবছিলাম। কী ভালো ছিল বল দিনগুলো? কোনো চাপ নেই, শুধু পড়া করলেই ছুটি। আর এখন? ছুটি নেই! এই আনন্দ,ঐ দ্যাখ চায়ের হাঁক শুনতে পেলাম ,একটু ডাক না।
–আমি কিন্তু খাবো না।
–খাস না, আমি খাবো ,ডাক।
-তুই ঠিক আগের মতোই নবাব নন্দিনী আছিস।
–তুইও, মানুষের ভিতরটা বোধ হয় পাল্টায় না জানিস?
–আমি পাল্টেছি‌। আর একটু পরেই নামতে হবে,চল এগিয়ে যায়।
–চা টা খেতে দে।
–শেষটুকু কেউ খায় না, এবার রাখ।
–আমি খাই।
–জানি তো,মাঝে মাঝে পাতা চেটে খিচুড়ি খাস্ ।
–যাঃ অতটা নয়, বেশি বলছিস। তবে তোর সঙ্গে দেখা হয়ে খুব ভালোই হলো,এতোটা পথ জানতেই পারলাম না,এক নিমিষেই শেষ।
–তাই?
–একদম,আর একটাই টোটো ধরে যাবো। অতটা বড় মাঠ,ভয় লাগবে না।
–এখন তো তুই গিন্নী,ভয়টা কিসের শুনি। ভয় করছে আমার।
–কেন? তুই আমার সঙ্গে যাবি বলে আমার সাহস বাড়ছে।
–আর তুই আমার সঙ্গে যাবি বলে আমার সাহস কমছে।
দু’জনেই হা হা হা হা করে একসঙ্গে হেসে ওঠে।
হয়তো অন্তরমণি বলে উঠলো
কুড়ি কুড়ি বছরের পরে
সেই মচ্ছপ, সেই খিচুড়ি, সেই ঠাকুরতলা,
শুভ দোল পূর্ণিমা।

২৮.৩.২০২১.
৪-৫১. পি. এম.
@ স্বত্ব সংরক্ষিত

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *