শ্রী সেন গুপ্ত / কলমের ভাবনা প্রিয় লাবণ্য

শ্রী সেন গুপ্ত / কলমের ভাবনা
প্রিয় লাবণ্য
এই অন্তহীন অপেক্ষার অবসরে
তোমার অলোকরাশি কতবার তোমার
গাল ছুঁয়েছে আমি জানি।
তোমার কপালে শিশির বিন্দুর মত জমে
ওঠা ঘাম হাতে হাত মিলিয়ে
বিদ্রোহ ঘোষণা করেছে গড়িয়ে
পড়ার। কতবার শাড়ির আঁচল অবিন্যস্ত
হয়েছে। কতবার তোমার পিপাসিত
জিভ জলের স্পর্শ চেয়েছে। কতবার
তোমার চলার ছন্দ থমকে গেছে
বাসন্তী বাতাসে। কতবার পলাশের
রক্তিম আভা তোমার দৃষ্টির করুণা
পেয়েছে। খসে পড়া গাছের পাতা
তোমার পায়ের পাতায় কত সুখস্মৃতির চুমু
খেয়েছে। ব্যাগের ভিতর রাখা শুকনো
শতায়ু প্রাপ্তি পলাশ তোমার অমৃত
স্পর্শে জীবন্ত হয়ে উঠছে। আড়ালে
আবডালে কতবার আমার স্মৃতি তোমায়
উদ্বিগ্ন ও উষর করেছে। ততবার তুমি
সযত্নে সবকিছু সর্বাংশে এড়িয়ে গেছ।
আমি শুনতে পাই তোমার প্রতি পায়ের পাতার চাপ এর আওয়াজ। তোমার সামনের সারির
অনুগামীরা অলক্ষ্যে এড়িয়ে
গেলেও আমি অপেক্ষায় আছি আজন্মকাল। দাও না একবার তোমার কনিষ্ঠ
অঙ্গুলীর শাসন, তোমার অবজ্ঞার অবসর
বিনোদিত দৃষ্টি…..
এসেছে তো সর্বনাশের মাস।
তোমার চোখে চোখ দেওয়া সেই মাতাল
চৈত্র।❤️ন
ইতি তোমার অমিত
প্রিয় অমিত
এই সেই জানলা, যার কথা আমি কতবার বলেছি তোমাকে। এইখান থেকেই আমি দেখি তোমার পৃথিবীকে। এই জানলা বেয়ে বয়ে আসে আলোর ঢল প্রতিফলিত হতে।
এইখান থেকেই ঐ আকাশটা দেখি যেখানে তুমি উড়তে চাও। এই জানলায় দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করি অবসরে বা আবদারে। এইখান থেকেই তোমার ইশারায় সূর্য ওঠে আর দিন শুরু হয়।
এই জানলা থেকেই শেষ হয় রাতের প্রহর। আসে একাকী মাঝ রাতের চাঁদ আমার নীরব সঙ্গী হতে। ঠিক এই জানলা দিয়েই দক্ষিণায়ণের কোল ঘেঁষা সূর্য আমার লাল মেঝেতে সামনে বসে সময় কাটিয়ে যায়। আমার সব কবিতার জন্ম ও এই জানলায়। — এই জানলার নিরালা ছায়ায় বেড়ে উঠেছে একটি নিমের গাছ।দীর্ঘদিন আকাশে ওড়া পাখিরা বিশ্রাম নিতে আসে এই জানলায়।
সমস্ত প্রতিবিপ্লবী প্রহরা ছিঁড়ে একবার তুমি এসো। আমি কৃপাপ্রাথী সুদীর্ঘ কাল।।
ইতি লাবণ্য