আজ আমার কলমে ,,,, সম্পর্কের সমীকরণ, কলমে-নিতু চৌধুরী,,,,

আজ আমার কলমে ,,,,
সম্পর্কের সমীকরণ,
কলমে-নিতু চৌধুরী,,,,

ইগনোর আর এভয়েড সম্পর্কের সমীকরণ ঠিক কিভাবে বদলে দেয় , একটা মানুষ আর একটা মানুষের মধ্যে ঠিক কিভাবে কতোটা দূরত্ব তৈরি করে,কি করে ভেঙ্গে দেয় সম্পর্কের সেতু।আজ সেই নিয়েই বলবো কিছু কথা আমার কলমে,,,

ব্যস্ত?
একটু কথা বলা যাবে?খুব দরকার ছিল,,,
যার উদ্দেশ্যে কথা গুলো বলা হলো, সে কিন্ত নীরব দর্শক। যেন কখনও তার কথা বলার দরকার ই ছিলো না তোমার সঙ্গে।যেন কখনও তোমার জন্য এক টুকুও সময় ছিলো না তার।যতো কথা বলার দরকার তোমার, কথা বলার ইচ্ছে তোমার। তার তো আসলে এসব পছন্দ নয় কারণ এখন তুমিই তার পছন্দের নও।সময় আছে বা নেই, ইচ্ছে আছে না নেই সেসব ভাবা বন্ধ করে বরং নিজের জন্য সময় ব্যয় করা ভালো।নিজের সুখ নিজের কাছে দামী হওয়া ভালো কারণ দিন শেষে আমরা তো নিজের অজান্তে নিজেরই থাকি। যতোই কেউ ভাবুক সে আমার, আমি ছাড়া সে অচল,আমি ছাড়া তার জীবনের কোন অস্তিত্ব নেই এগুলো সবই কিন্ত একটা সময় ভুল বলে গণ্য হবে কারণ সময়ের সঙ্গে সবই পরিবর্তন শীল,তাহলে মানুষের মন কি করে তার উর্ধে হবে?একটা সময়ে যে মানুষ টা হয়তো তোমার সব থেকে ভালো বন্ধু ছিলো,ছোট্ট ছোট্ট কথা তোমরা একে অন্যের সঙ্গে শেয়ার না করলে থাকতে পারতে না,একটা সময়ে তোমার সব কাজে যে মানুষটির সবথেকে বেশি উৎসাহ ছিলো সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দেখবে সেই নিরুৎসাহিত হয়ে পরেছে।আসলে তার মনের পরিবর্তন হয়েছে কিন্ত তোমার হয়নি তাই তুমি কষ্ট পাচ্ছো, মেনে নিতে পারছো না।কিন্ত বিশ্বাস করাতেই হবে মনকে বেঁচে থাকতে গেলে,পরিবর্তন অবশ্যম্ভাবী হয়ে পরে তখন। মনকে বোঝাতেই হবে”অজুহাতে অবহেলা করার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করা আজ থেকে বন্ধ করে দিলাম”।
তার পছন্দের জিনিস গুলো বা পছন্দের কাজ গুলো যেটা একটা সময় হয়তো তাকে গুরুত্ব দিতে গিয়ে অজান্তেই আপন করেছিলে সেগুলোকে আর গুরুত্ব না দিয়ে এবার আবার নিজের ইচ্ছা কে গুরুত্ব দিতেই হবে ভালো থাকতে গেলে।প্রিয় মানুষের প্রিয় সব কিছুকে গুরুত্ব দিতে গিয়ে নিজেকে ভালোবাসতে ভুলে গেলে একটা সময় দেখা যাবে নিজের কাছে নিজের গুরুত্ব কমে গেছে।
তাই কার আমি পছন্দের বা আমার কে পছন্দের?কে প্রিয় বন্ধু না কে অপ্রিয়,কে আমার আপন আর কে পর,কার সঙ্গে রক্তের সম্পর্ক আছে আর কার সঙ্গে নেই, কে আমাকে ভালোবাসে বা কে ভালো বাসেনা এসব নিয়ে মাথা ঘামানোর ইচ্ছেটাই মরে যাবে। তখন মনকে বলতে ইচ্ছে করবে,,

জীবন যে রকম চলছে চলুক
তুই তোর মতোই থাক,
সবকিছুর থেকে নিজেকে
একটু আড়াল করেই রাখ।
যাসনা অন্য কোথাও ভেসে ভেসে
মেনে নে নাহয় সবকিছু হেসে হেসে।

সম্পর্কের সেতু নির্মাণের সময় ভীতটা কিন্ত মজবুত থাকা দরকার। সে সম্পর্ক যাই হোক প্রেমিক-প্রেমিকার বা বন্ধুত্বের, স্বামী-স্ত্রীর বা সন্তানের সঙ্গে মা বাবার বা ভাই-বোনের ।সেখানে সেই সম্পর্কের ভীতের কাঠামোটা কিন্ত ভালোবাসা নামক সিমেন্ট, বিশ্বাস নামক ইঁট, বুদ্ধিমত্তার বালি,আবেগের কাঠ আর অবশ্যই সময়ের জল দিয়ে ভালো করে বানানো উচিত যাতে ভিতটা শক্ত হয়। যাতে হাজারো মিথ্যা অভিযোগের প্রাকৃতিক দুর্যোগে ভেঙ্গে না পরে বা অবিশ্বাসের বেনোজল ঢুকতে না পারে সেখানে। যদি সম্পর্কের ভিত সত্যিই মজবুত থাকে তবে সবটা সময়ই থাকবে একে অপরের জন্য ,নাহলেই থাকবে অসময়ের অজুহাত।
এগুলো অবশ্যই আমার মনের চিলেকোঠার গোপন কুটুরিতে জমা কথা, সবাই একমত নাও হতে পারে।

সম্পর্কের সমীকরণ ঠিক মেলানো তখনই যায় যখন সব সম্পর্ককে সমান গুরুত্ব দেওয়া যায়। কোন সম্পর্ক কে টাইম পাস করা ভেবে নয়,ভালোবাসা,ধৈর্য আর বিশ্বাসের বন্ধনের সুতো দিয়ে বাঁধলে ভবিষ্যতে আলগা হওয়ার বা ছিঁড়ে যাওয়ার ভয় থাকেনা। কিন্ত যদি কেউ কোন সম্পর্কের ফলে হাঁফিয়ে ওঠে তবে তা থেকে মুক্তি নেওয়াই শ্রেয় কারণ ভয়ে যেমন ভক্তি হয়না তেমন ই ভয়ে ভালোবাসা হয়না। আর কোন সম্পর্কে ভালোবাসা,বিশ্বাস ,আবেগ না থাকলে সে সম্পর্ক টিঁকবে কেমন করে?
কাঁচের ফাটল যেমন জোড়া দিলেও দাগ দৃশ্যমান থাকে সম্পর্কেও কাঁচের মতোই স্বচ্ছতা থাকা উচিত নাহলে ফাটলের দাগ দেখা গেলেই মুস্কিল। তখন “ইয়ে ফেভিকল কা মজবুত জোড় হ্যায় ভাই, টুটেগা নহী “,বললেও কিন্ত কিছু করা যাবেনা। তাই সম্পর্কের ভিত যদি সত্যিই মজবুত করতে হয় তাহলে ভালোবাসা,আবেগ, সময়, ধৈর্য্য, পারস্পরিক কর্তব্য এই ছোট্ট ছোট্ট প্লাস ,মাইনাস ডিভাইড, মাল্টিপল সব সূত্র ঠিক ঠিক করে কাজে লাগাতেই হবে।নাহলে ভিত কিন্ত নড়বড়ে হতে বাধ্য। অম্বুজা সিমেন্ট দিয়েও তখন আর নতুন করে মেরামত করা যাবেনা বন্ধুরা।
তাই সময় থাকতে থাকতেই বুঝতে হবে কোন সম্পর্কে ঠিক কতোটা ইগনোর বা এভয়েড করা উচিত আর কখন সেই কাজটা করা উচিত নয়।
আসলে আমরা নিজেদের খুব বেশি চালাক আর উল্টোদিকের লোকটাকে বোকা ভাবি বলেই যতো গন্ডগোল।
নিজেদের একটু বোকা ভেবে দেখুন, একটু আবেগ তাড়িত বা আবেগ প্রবণ হয়ে দেখুন হয়তো একটা সময় আপনার সেই বোকামিই আপনার জন্য ভগবানের বরদান হলেও হতে পারে।
এতো গেলো আমার মনের কথা, আমি যে জানতে চাই আপনাদের মনের কথা।
তাই দেরী না করে আজ থেকেই লেগে পরুন সম্পর্কের ভিত মজবুতির কাজে, সাথে পাবেনই আমাকে, কথা দিলাম কারণ আপনারা মানে আমার পাঠক গণের সঙ্গে আমার সম্পর্কের মজবুত বন্ধন নাহলে গড়ে উঠবে কি করে, তাইনা,,,
সমাপ্ত

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *