“মেঘবালিকা ” ✒️সুজিত অধিকারী

“মেঘবালিকা “
সুজিত অধিকারী

মেঘবালিকা বললো এসে ,”খেলবে নাকি বেলা শেষে ?”
“লিখতে অনেক বাকি আছে ” বললো কবি এক নিমেষে …..
অভিমানী মেঘবালিকা রইল বসে গোমড়া মুখে।
কবির তাতে বয়েই গেলো,স্বপ্ন দেখে উদাস চোখে ।

মেঘবালিকা স্বপ্ন দেখে এড়িয়ে সবার প্রশ্ন নজর ।
স্মরণ করে হারানো দিন, পিছন হেঁটে কয়েক বছর।
বৃষ্টি সেদিন ঝরে ছিলো বুকের ভিতর, বুঝতে কেউ পারেনি সেই গোপন রোদন- বাষ্পমোচন।
হেসে ছিল কী ছলনায় ……
বৃষ্টি ভিজে এক লহমায়।
ঝড় বিদ্যুৎ বজ্রপাতেও তুমি আরাম কেদারায় ……।

আড় চোখে চোখ রেখে
বুঝতে হয়নি ভুল,
গলায় তখন গানের আবেশ
রবীন্দ্র নজরুল।
কষ্ট নিয়ে কষ্ট পেতাম বোঝো নি কোন দিন।
চোখের জলে ভিজতো হৃদয় অস্থিরতায়
হতাশ দিন ।
একদিন তো সাহস ভরে জমাট বাঁধা কষ্ট কথা ভাঙলে এসে আমার বুকে…..।
স্পষ্ট কথায় গললো বরফ এক চিলতে মুক্তি সুখে ।
তারপর কেটে গেলো
অনেক বছর বদ্ধ তোমার বাহুডোরে ভীষণ মায়ায় …..।
আমি তখন কলেজ, রঙিন ইউনিফর্ম, তোমাকে দেখাতো বেশ ঢিলে ঢালা পাঞ্জাবি চোস্তায়।
উসকো খুসকো একমাথা চুল ,দাড়ি আর পোড়া সিগারেট …..
হাতে একটা ঘড়ি ছিলো, নয়তো মডারেট।
রাগ ছিলো না, গুরুত্ব কম , মুচকি হাসি অকারণ।
কবিরা এই রকমই হয় বুঝি ? ভাবি সারাক্ষণ ।

ভীষণ খুশি মেঘে-ছায়ায় লিখলো কবি সাদা খাতায়,প্রেমের হাওয়ায় মেঘ বালিকা…….
উড়ছে তখন নতুন দিশায় …. উপছে পড়ে প্রেমের জোয়ার সমান্তরাল সরল রেখায়। তারপর বৃষ্টি এলো, ভিজিয়ে দিলো চোখের পাতা।
ভালোবেসে হারিয়ে যাওয়ার অবাধ ছিল স্বাধীনতা।

মন পবনে উজাড় করে, রাখলো কবির সেই ঠিকানা।
কবির শুধু কলম ছাড়া বাকি সবই অজানা । গলির মুখে অন্ধকারে হারিয়ে গেল অন্য মায়ায় মেঘবালিকার নতুন প্রেম….
কবির মন ছন্নছাড়া নিকষিত হেম।
বিরহী মেঘ!
বৃষ্টি ফোঁটায় প্রেম কে খোঁজে , অনন্ত কাল।
থামলো বৃষ্টি , রইলো পড়ে সাতসকাল।
আলো আঁধারে যায় না দেখা পায়ের নিচে নরম মাটি।
আলগা হলো জয়ের ধ্বজা
পড়লো ভেঙে হৃদয় খাঁটি।

বিজ্ঞাপনের মুখোশ খুলে তাকিয়ে দেখে
চোখের আড়ে।
তবুও কবি লিখছে বসে বেদনাভরা কাব্য কথা।মরুভূমি আর অরণ্য গাথা।
মেঘ বালিকা মুচকি হেসে উড়িয়ে দেয় সে সব কথা। বুঝলো কবি মেঘ বালিকার দুঃখ জ্বালা , প্রহর গুনে কাটিয়ে দিলো একাকীত্বের বিরহ-বেলা।

সে অনেক পুরানো দিনের কথামালা ……….।
ভাবছে কবি বদলে নেবে বোহেমিয়ান জীবনচলা।
ঠিক তখনই ঝলসে উঠে পুরানো সেই দিনের কথা।
সহজ নাকি বদলে নেওয়া নির্জনতার হট্টমেলা ?
অসীম – আকাশ ,
বৃষ্টি- বাদল উড়ে চলে মেঘবালিকা
অনুভবে তার যন্ত্রণারই অনুরণন ক্ষণে ক্ষণে …
কবির কলম নীরব কান্না মনে মনে।
ফিরলো না সে মেঘবালিকা
দমকা হাওয়ায় ভাসিয়ে নিলো
নতুন আকাশ অনুক্ষণ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *