কবিতা : *বৈপরীত্য* ✒️ *নীহার কান্তি মন্ডল*
কবিতা : *বৈপরীত্য*
*নীহার কান্তি মন্ডল*
বহু কাল আগে একটা সিনেমায় দেখেছিলাম
সন্তান-হারা এক জননী একটা পুতুলকে
কোলে নিয়ে আদর করছে,
স্নান করাচ্ছে, খাওয়াচ্ছে,
ঘুমপাড়ানি গান শুনিয়ে ঘুম পাড়াচ্ছে;
নিজের বন্ধ মুখে আঙুলচাপা দিয়ে
আশপাশের সবাইকে চুপ থাকতে বলছে।
যদিও শেষ পর্যন্ত সেই শোকার্ত মায়ের
কাতর মিনতি উপেক্ষা করেও
তার শুভাকাঙ্খী স্বজনেরা তাকে
ভর্তি করেছিল অ্যাসাইলামে
বদ্ধ পাগল আখ্যা দিয়ে।
অজস্র দেবদেবীর এই দেশে
লক্ষ লক্ষ মানুষেরা জনশ্রুতির অন্ধবিশ্বাসে
পাপমুক্তি কিংবা মোক্ষলাভের অমোঘ লোভে
পাথর কিংবা ধাতব মূর্তিকে
প্রত্যহ নিয়ম মেনে গঙ্গাজলে স্নান করায়,
যত্ন করে খাবার তুলে দেয় মুখে
দিনরাত্রি পাখা চালিয়ে রাখে মাথার উপরে
চামর দোলায়, গান গেয়ে ঘুম পাড়ায়।
নিশিদিন আলো জ্বালিয়ে রাখে
দেবতার অন্ধকার/অন্ধত্ব ঘোচানোর জন্য
অসংখ্য অভুক্ত অপুষ্ট শিশুর চোখের সামনে
পাথরের মূর্তিগুলোতে রোজ
গ্যালন গ্যালন দুগ্ধও ঢালা হয়।
এরা সবাই ধার্মিক আখ্যা পায়
এদের স্থান সুসজ্জিত গৃহকোণে
কিংবা দেবালয়।