সেদিনগুলো সরস্বতী পুজোয় ——- সীমা সান্যাল
সেদিনগুলো সরস্বতী পুজোয়
—————————————++
সীমা সান্যাল
——————-
সরস্বতী পুজো মানেই দুরকমের হাতেখড়ি—
অবাক লাগছে তো?
আরে — একটা তো শ্লেটপেনসিলে অ আ ক খ
আর একটা শাড়ি পড়ার হাতেখড়ি। তাইনা?
সেই ছোট্টবেলার কথা মনে পড়ে যায় সরস্বতী পুজো আসলেই— আমন্ত্রণ পত্র নিয়ে স্কুলে স্কুলে দিয়ে আসতাম।
আগের দিন স্কুলে দোলমঞ্চে প্যান্ডেল বানানো, রঙিন কাগজ দিয়ে বন্ধুরা মিলে নানারকম কারুকাজ, আল্পনা দেওয়া—-।
পুজোর দিন ভোরবেলায় মা গরম জল করে দিতো। হলুদ মেখে স্নান করে মা কে তাড়া দিতাম–মা বলে, হলুদ নাকি শক্তি আর মঙ্গলের পরিচয়– তাড়াতাড়ি করে ঘরের পুজো করতে। স্কুলে যেতে হবে তো! ঘরে অঞ্জলি দিয়েই দুদিন আগে থেকে ঠিক করে রাখা মায়ের শাড়ি পরে সাজুগুজু করে স্কুলে যাওয়া। আমাদের স্কুলে সরস্বতী পুজোর দিন শুধু ফলপ্রসাদ খাওয়াই হতো। দুদিন পর খিচুড়ি ভোগ। সেও এক বিরাট আনন্দ। সে যাই হোক পুজোর পর সবাই স্কুলে অঞ্জলি দিয়ে ঘুরে বেড়ানো দলবেঁধে। ফলের মধ্যে কুল খাওয়ার ঝোঁক ছিল সবচাইতে বেশী। সরস্বতী পুজোর আগে কুল খেয়ে নিলে পরীক্ষায় পাশ করতে পারবোনা ( ঠাম্মি বলতো।) পরে জেনেছি যে কোন প্রথম মরশুমি ফল আগে দেবদেবীকে নিবেদন করতে হয়।
সন্ধ্যায় স্কুলে হতো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সবাই মিলে কতো হৈ হৈ কতো মজা—-
ক্লাশ নাইন টেনের দিদিরা মাঝেমাঝে শাড়ির কুঁচি আঁচল ঠিক করে দিতো।
বড়ো হতে লাগলাম,। প্রতি বছর সরস্বতী পুজোও আসে।যতো বছর যায় ততো যেন আনন্দ ফিকে হয়ে আসে।—-
তবুও চাই সকলে আনন্দে ভরে উঠুক। মা সরস্বতীর আশীর্বাদে সব শুভ হোক।