কথোপকথন (শাশুড়ী বৌমা) — মীনা দে
কথোপকথন (শাশুড়ী বৌমা)
মীনা দে
এ কী তৃণা! বন্ধুর জন্মদিনের পার্টিতে শাড়ি পরে যাচ্ছ? তোমার অন্য কোনও ড্রেস নেই?
—আছে তো মা, কিন্তু আমি শাড়িতেই বেশি কমফর্টেবল ফিল করি।
—কিন্তু আমি তো জানি তোমরা আজকালকার মেয়েরা ওয়েস্টার্ন ড্রেস পরতে বেশি ভালোবাসো। অন্ততঃ পালাজো কুর্তি , চুড়িদার কামিজ !
—না মা ওসব পোশাক যতই সুবিধাজনক হোক সৌন্দর্যের দিক থেকে শাড়িই কিন্তু সব সময় এগিয়ে। আর শাড়ি এমনই এক পোশাক যা কিনা সব মহিলাকে তার নিজস্বতা ফুটিয়ে তুলতে সাহায্য করে। এই দেখুন না, বিখ্যাত লেখিকা সুধা মুর্তি, মারাঠি, কন্নর, ইংরেজি তিনটে ভাষাতেই গল্প উপন্যাস লেখেন ইন্জিনিয়ারিং কলেজে অধ্যাপনা করেন আবার ইনফোসিস এর চেয়ারপার্সন। অথচ সব সময় পরনে সেই ভারতীয় পোষাক শাড়ি। এমন কি চুলে রংও করেন না। কি অপরূপা তিনি! মুখে সদা সর্বদা মিষ্টি হাসি। অসাধারণ বুদ্ধিদীপ্ত চেহারা দেখলেই মন ভালো হয়ে যায়। মা! সৌন্দর্য কিন্তু শিক্ষা, দীক্ষা, ব্যবহার ,আচার আচরণ এই সবের ওপর নির্ভর করে। পোশাকের ওপর নয়। কেন? শাড়ি পরে কী ইংরেজী তে টকটক করে কথা বলা যায় না! এই তো আমিই তো বলি। শাড়ি পরেই জার্নিও করি অনায়াসে । এতটুকুও অসুবিধে হয়না তো! আমার তো মনে হয় তাতে আমার আত্মবিশ্বাস আরও জোরদার হয়।
—কিন্তু আমাদের আগামী কাল যে নিউমার্কেট যাবার কথা আছে, আমি তো পালাজো আর কুর্তি পরে যাব ভাবলাম। তুমি যদি সেই শাড়িই পরো তবে আমাকে কী মানাবে!
—কেন মানাবে না মা! তোমাকে সেইভাবে ক্যারি করতে হবে। এটাই যেন মনে হয় যে তুমি এইসব ড্রেসেই বেশি স্বচ্ছন্দ। কখনও যেন মনে না হয় যে তুমি স্টাইল করার জন্য পরেছ। দোকানে গিয়ে বিক্রেতা যদি হিন্দিতে বা ইংলিশে কথা বলে তবে সেই ভাষাতেই তোমাক কথা বলতে হবে।
— কেন ! তুমি তো থাকবে , তুমি বলবে।
—মাআ, সেতো আমি বলতেই পারি কিন্তু তোমার কথাগুলো আমি বললে কি তোমার ভালো লাগবে!
_সব ড্রেসেরই তার নিজস্ব সৌন্দর্য আছে। সেটা ঠিক মতো ফুটিয়ে তুলতে জানতে হবে। সে শাড়িই হোক বা অন্য কোনো পোশাক। আর যখন যে পোশাকই পরি না কেন নিজেকে সেই ধাঁচে প্রেজেন্ট করতে হবে।
—তার চেয়ে ভালো চলোনা আমরা দুজনেই সুন্দর করে শাড়ি পরে নিউমার্কেট ঘুরে আসি।