সম্পাদকীয় কলমে গীতশ্রী সিনহা

সম্পাদকীয়

কথা দিয়েছিলাম লিটিল ম্যাগাজিনের কিছু কথা নিয়ে ফিরবো। প্রকৃত অর্থে লিটিল ম্যাগাজিনের চরিত্র হচ্ছে প্রতিবাদী ও তথাকথিত প্রতিষ্ঠান বিরোধী। তাই প্রথাবিরোধী মেধাবী সৃষ্টিশীলদের সাহিত্যচর্চার শ্রেষ্ঠ মাধ্যম হচ্ছে লিটিল ম্যাগাজিন। সাহিত্যের গতি – প্রকৃতি, তরুণ লিখিয়েদের আনকোরা উপস্থাপন ও সাহিত্যের নানামুখী পরীক্ষা নিরিক্ষা করা হয়ে থাকে। আমাদের বাংলা সাহিত্য- সংস্কৃতির সাথে লিটল ম্যাগাজিনের সম্পর্ক তো এক কথায় আষ্ঠেপৃষ্ঠে জড়ানো। লিটিল ম্যাগাজিনের আলোচনা আসলেই বাংলাভাষার অন্যতম খ্যাতিমান লিটল ম্যাগাজিন সম্পাদক বুদ্ধদেব বসুর নামটিও অবিচ্ছেদ্যভাবেই চলে আসে।
‘ দেশ ‘ পত্রিকার মে ১৯৫৩ সংখ্যায় ‘ সাহিত্যপত্র ‘ প্রবন্ধে বুদ্ধদেব বসু আলোচনা করতে গিয়ে বলেন, লিটিল ম্যাগাজিন কী, কেন এবং গড়পরতা সাহিত্য সংকলন পত্রের সাথে এর পার্থক্য কোথায় কীভাবে, তার একটা মোটামুটি চিত্র অঙ্কিত হয়ে যায়।
আমরা মনে করি, লিটিল ম্যাগাজিনের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য তার সৃষ্টিশীলতা ও নবসৃষ্টির আন্দোলনে। নবচেতনা নিয়ে লিটিল ম্যাগাজিনের আত্মপ্রকাশ এবং লেখক পাঠকদের মধ্যে সেই নবচেতনাকে সঞ্চারিত করা। শ্রেষ্ঠ লিটল ম্যাগাজিন গুলো নতুন সাহিত্য আন্দোলনের মুখপাত্র। সাহিত্য, দর্শন, ইতিহাস, সমাজ চিন্তা, বিজ্ঞান ইত্যাদি সকল ক্ষেত্রেই লিটিল ম্যাগাজিন হতে পারে এবং হয়েছে। সমাজ, সাহিত্য এবং সংস্কৃতির ভাবনা এই ম্যাগাজিনের প্রকাশের প্রেরণা এবং প্রকাশে উৎস।
১) যে কোনো দেশ ও জাতির সাহিত্য সংস্কৃতির ধারক এবং বাহক লিটিল ম্যাগাজিন।
২) কম পুঁজিতে বৃহৎ চিন্তার প্রকাশ।
৩) নিজস্ব লেখক গোষ্ঠী দ্বারা চালিত এবং নতুন লেখক তৈরি হয়।
৪)নিরপেক্ষ এবং নির্ভীক বক্তব্য তুলে ধরে সমাজ সাহিত্য কেন্দ্রিক বিশ্লেষণ করে।
৫) লিটিল ম্যাগাজিনকে বলা যায় তারুণ্যের সাহিত্য বা সাহিত্যের তারুণ্য।
৬) সাহিত্যের প্রাঙ্গণে পরীক্ষা নিরিক্ষার কেন্দ্রস্থল
এমন অনেক বলা যেতেই পারে লিটিল ম্যাগাজিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে বলতে গেলে।
দায়বদ্ধতা, বিশেষ চরিত্র বাহক চিহ্নিতকারক সমাজের প্রতি উদ্দেশ্যবাহী।
সবশেষে বলি, লিটিল ম্যাগাজিন যে কোনো বিষয়ের হতে পারে, যেমন, কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ, নাটক, চলচিত্র, সঙ্গীত, ধ্রুপদী সাহিত্য, শল্পকলা, অনুবাদ, লোকসংস্কৃতি, ইতিহাস, বিজ্ঞান ইত্যাদি সকল আলোচনা সমালোচনার সামনা-সামনি হয়ে এসেছে।
মনে হতেই পারে, আর্থিক কারণে এসব পত্রিকা দীর্ঘজীবী হতে পারে না। পরিশেষে বলি, সব শেষের আবার শুরু আছে, আমাদের জীবন কিছু চিহ্নময় প্রশ্নে থেমে থাকে না।
আগামী সংখ্যায় সেই নিয়ে আলোচনায় আসছি।
আজ তবে এই পর্যন্ত, শুভকামনা ভালোবাসা অপার শুভেচ্ছা অভিনন্দন রইল সকল নিয়মিত পাঠক, কবি সাহিত্যিকদের প্রতি।
নমস্কার। সম্পাদকীয় কলমে গীতশ্রী সিনহা ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *