শিরোনাম: আম্রপালী কলমে : : উর্মি পান্ডা

শিরোনাম: আম্রপালী
কলমে : : উর্মি পান্ডা

তোমার কিসের এতো অহংকার, বৌদ্ধ ভিক্ষু ?
তুমি সবকিছুতেই এমন নিস্পৃহ, নির্লিপ্ত, থাকো কি ভাবে?
তুমি কি জানো ,কতো রাজা মহারাজা, আমাকে পাওয়ার জন্য উন্মাদপ্রায়?
কতো রক্তক্ষরণ ,কতো হানাহানি, কতো যুদ্ধ হয়েছে, শুধু আমার জন্য?
আমি সারা জীবন ,শুধু মাত্র একজন পুরুষের বক্ষ লগ্না হতে পারিনি।

পুরুষদের চোখে আমি দেখেছি ,কামনা-বাসনা ,আমাকে পাওয়ার উন্মত্ত, উদগ্র লালসা।
আর ,তুমি আমাকে অবহেলা করছো?

তোমাকে প্রলুব্ধ করার কোন প্রচেষ্টা ই তো আমি বাকি রাখিনি।
নারী শরীর তোমায় আকর্ষণ করে না?
আমার দিকে তাকাও ।চোখে চোখ রাখো আমার।

কি সৌম্যদর্শন তুমি।
কি অপূর্ব তোমার দুটি চোখ।
শ্রমন ,তোমায় আমি প্রলুব্ধ করতে পারছি না।
কিছুতেই পারছি না।

এ যে আমার কতো বড়ো পরাজয়।
আমার নারী সত্তার পরাজয়।
নগর নটী ,আম্রপালীর সৌন্দর্যের পরাজয়।
এই পরাজয় আমি মেনে নিতে পারছি না।

একটু দয়া করো আমায়।
এসো, আমরা আলিঙ্গনবদ্ধ হই।
দু’বাহুর নিষ্পেষণে পিষ্ট করো আমায়।
রতি কাম রসে সিক্ত করো আমায়।

তুমি কোন পরম সম্পদের সন্ধান পেয়েছো শ্রমন, যার জন্য এই পৃথিবীর কোন কিছুই তোমাকে আসক্ত করে না?
কোনোকিছুই তোমায় বিচলিত করে না?
কি সে সম্পদ?

এই চার মাসে আমিও কেমন ধীরে ধীরে বদলে যাচ্ছি। পৃথিবীর ধন-সম্পদ কামনা-বাসনা, কোন কিছুতেই আর আমার আসক্তি থাকছে না।
আমার সর্বগ্রাসী দাউদাউ করে জ্বলা কামাগ্নি ,ধীরে ধীরে রূপান্তরিত হচ্ছে ,শান্ত স্নিগ্ধ দীপের আলোকে।
দিব্য আলোকে বিস্ফারিত হচ্ছে আমার দুটি চোখ।

আমি পরম সত্যের সন্ধান পেয়েছি, শ্রমন।
সারা জীবন ,শতশত পুরুষের কামনা বাসনা চরিতার্থ করে ,আমি যে ধন সম্পদ অর্জন করেছি, তা আমি দান করে দিতে চাই।
সর্বস্ব খুইয়ে আমি পেতে চাই সেই পরম সত্যকে।

হে পরম পুরুষ, তুমি আমায় ক্ষমা করে দাও।

তোমার ধর্মে আমায় আশ্রয় দাও।
তোমার সংঘে আমায় আশ্রয় দাও।
তোমার চরণে আমায় আশ্রয় দাও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *