#মেয়েজন্ম, #শ্বেতা_ব্যানার্জী
#মেয়েজন্ম,
#শ্বেতা_ব্যানার্জী
অভিরূপ,
বিশেষণ কী দেবো বুঝতে পারছিনা,
তুই আমার দিকে আঙুল তুলে এড়িয়ে গেছিস,
এটাই তো স্বাভাবিক। তবে আমি পুরুষ সমাজের দিকে আঙুল তুলবোনা, কয়েকটা পুরুষের জন্য
কেন পুরুষ সমাজ কলঙ্কিত হবে!! সব পুরুষ যদি খারাপ হ’তো তাহলে পৃথিবী শকুনের উঠোন হয়ে উঠতো আর রাস্তায় হায়নাদের হানাদারি—-
হ্যাঁ যে কথা বলতে তোকে চিঠি লেখা, যদিও ঘৃণা হচ্ছে তোকে চিঠি লিখতে তবু্ও বলি…
আমি আর ছেলেমানুষী করে ব্যাগে লঙ্কাগুড়ো কিম্বা ব্লেড,ছুরি এইসব বোকামি জিনিস রাখিনা।
বাবা আমার জীবনে কোন ভোরে চলে গেছে …
তখন থেকেই সংসারের হাল আমার কাঁধে, ভীড় বাসে,ট্রেনে, কনুইয়ের ধাক্কা,কিম্বা পিছনে দাঁড়িয়ে আমাকে উত্যক্ত করে নিজের উত্তাপ খোঁজা অনেক সয়েছি।
আজ আমি এই বিষয়ে বড় স্বাবলম্বী হলাম–
ব্যাগে ব্যবহারিক জিনিসের পাশাপাশি আর একটি জিনিস রাখি…
যাতে হায়নাদের মুখে ছুঁড়ে দিয়ে সেইসময় টুকু উপভোগ করতে পারি। মেয়ে হয়েছি তাই কলঙ্কিত
হবার দায়ও আমার, তাহলে উপভোগ করেই কলঙ্কিত হই। শুধু শুধু থানা পুলিশ করে লাভ কী!?
সংসারটা আমি ছাড়া যে চলবেনা —-
মায়ের ওষুধ, ভাইয়ের পড়াশোনা, বোনের বিয়ের ব্যবস্থা। আমি শেখার চেষ্টা করছি ” কনডেম ” করা করা কা’কে বলে।
আর রাতের ফেরা না ফেরা নিয়ে কথা তুলে আমাদের সম্পর্কটা ছিঁড়ে দিলি, এই টানাহেঁচড়া আর নিতে পারছিনা অনেক হলো।
কৈফিয়ত নয় তোর মতন অমানুষ কে জানিয়ে রাখি। আমি এক সরকারী হসপিটালের মাধ্যমিক পাশের জুনিয়র স্টাফ নার্স, এই কোভিড পরিবেশেও আমি সকল রুগীর পাশে আছি। আর রাত-দিনের তফাৎ ভুলেই। আমি কোভিড যোদ্ধা, কিন্তু কোভিডের থেকেই আরও বিপদজনক ভাইরাস আজ রাস্তা -ঘাটে। এই ভাইরাসের আক্রমণে মৃত্যু আসে আস্তে -আস্তে..
প্রথমে সংসার- সমাজ তিলেতিলে টুঁটি টিপে ধরে,
তারপরে হয়তো হসপিটালের বেডে শুয়ে মৃত্যুর দিন
গোণা, নয়তো আত্মহত্যা।
তাই এই অস্ত্র আমি নিজেই তুলে নিয়েছি, ভোগ যখন করবো উপভোগ কেন নয়!?
আসলে ভিক্টিম তো ন্যায়বিচার পায়না—
তুই আবার ভাবিস না এটা অভিসার,
এটা অভিযোজিত বা নিষাদের বাণ।
বাবা মারা যাবার পর মাধ্যমিকের বেশি পড়াশুনা এগিয়ে নিয়ে যেতে পারিনি, তবে ভাবছি তোর মতন শিক্ষিত হয়ে লাভ কী!! যেখানে শিক্ষা কয়েকটি অক্ষর। আমার জবানবন্দি বল, আর শেষ চিঠিই বল শেষবারের মতন শেষ —
এরপর মেডিকেল স্টোর্স বন্ধ হয়ে গেলে কাজের
জিনিসটা নেওয়া হবেনা, আসলে আমি হসপিটালের মেডিকেল শপ্ থেকে নিইনা,সেখানেও যে কিছু
জিজ্ঞাসুক চোখ জরিপ করে। মেয়ে হয়ে জন্মেছি
আজীবন জরিমানা তো দিয়ে যেতেই হবে..।
ইতি টানবোনা ইতিহাস গড়বো —
আর আমার নামে তোর ঘৃণা বোধহয়, তাই নাম নয় জন্মের দোষ ও দোহাই দিয়ে ….।
★ মেয়েজন্ম★