#মৃগয়া_লাজ—— সঞ্জয় বিশ্বাস
#মৃগয়া_লাজ
#কলমঃসঞ্জয় বিশ্বাস
————————
মালিনীর তীরে কান্নার আওয়াজ
শোনা যায় কোন শিশুর গলা;
তপোবন পাশে কন্ব নিরিখে
দিব্যাঙ্গনা শকুন্তলা।।
তুলে নিলো কোলে মুনি কন্ব
সদ্যজাত জীবনের দলা ;
লাঞ্ছিত সেই শিশুমুখই আজ
তপোবন মাঝে শকুন্তলা।।
ভিজেছে কপোল শকুন্তলার
জন্ম যাদের পাপের ফলে;
রাখেনি খবর বিশ্বামিত্রাও
মেনকার চোখ ভরেনি জলে।
সঙ্গম মোহে সজ্জা পাতি
চেতনার বলি ভ্রুণরা আজ;
রেখে গেল তারে একলা ফেলে
মুছে নিতে যত কলঙ্ক লাজ।।
তবু পূজ্যতে মুনি ঋষিবর
জানি ইন্দ্র তোমার মতে;
লাঞ্ছিত আজ সেই তো নারী
দেবতা দেখানো ঘৃণ্য পথে;
কন্ব আবেশে তপোবন ঘেঁষে
চন্দ্রমুখীর এ পথ চলা;
ফুলোদল সাথে উঠছে বেড়ে
মোহিনী রূপে শকুন্তলা।
সখি সব দলে বন পথ তলে
পুষ্প তুলিতে ছুটিছে যত;
অঙ্গে তাহার উছলিয়া পড়ে
যৌবনা ঢেউ তটিনীর মতো।
মৃগ নয়না বনচারিনী মেয়ে
অঙ্গে চুমিছে জ্যোৎস্নার চাঁদ;
ও রূপ হেরি, ছিন্ন করিলো
দুস্মন্তের কামনার বাঁধ।
প্রণয় বেড়িতে বাঁধা পড়ে শেষে
সাজিয়েছিল স্বপ্ন বাসর;
কথা দিয়েছিল নিয়ে যাবে তারে
রাজার আলয়ে কিছুদিন পর।।
আসেনি ফিরে রাজা আর কভু
ব্যথাভার নামে দীর্ঘ শ্বাসে;
উদাসী নয়নে নিয়ে দিন কাটে তার
পথো চেয়ে রয় রাজার আশে।।
মৃগয়ার এসে কামনায় ভেসে
মৈথুন সুখে লালিত প্রীতি;
ভুলে যায় শেষে রাজাসনে বসে
মধ্যযামের অতীত স্মৃতি;
ললাট লিখেছে কামনা খেওয়াল
পণ্য নারী তোমার মতো;
দুর্বাশা বেশে অভিশাপ এসে
বাড়িয়েছে আরও বুকের ক্ষত।।
আজ রাজ দরবারে শকুন্তলা
গর্ভে তাহার কলঙ্ক লাজ;
রাজসভা হতে আঁখি জল লয়ে
ফিরিলো আবার তপোবন মাঝ।
দুস্মন্তরা মৃগয়ার এসে
আজও ভেজায় মদিরায় গলা;
আংটি হারিয়ে আজও কাঁদে কত
নিঃস্ব অসহায় শকুন্তলা।।
কথা রাখেনা দুস্মন্তরা
রাজার খেয়াল-যৌবন নিয়ে;
রাখতে পারেন হাজার সঙ্গী
ভোগই আসল! কিসের বিয়ে।।
গোটা দেশ জুড়ে দুস্মন্তরা
ছোটায় কামুক লালসার রথ;
লাঞ্ছিত হয়ে শকুন্তলারা
বেছে নেয় শেষে মৃত্যুর পথ।
দিকে দিকে আজও শকুন্তলারা
আঁচলে ঢাকে আব্রু সলাজ;
“ভরতকে”আজও নেয়নি মেনে
মুখোশে ঢাকা সভ্য সমাজ।।
#কলমঃসঞ্জয় বিশ্বাস
—————ঃ ঃ————