ইভেন্ট——– @ পাপিয়া

ইভেন্ট:
বিষয়: “হাল” নিয়ে রম্য কবিতা/গল্প/ রম্য রচনা।
~~~~~~~~

#পরশ পাথর ( রম্য কবিতা)।
~~~

চলতে গিয়ে হোঁচট খেয়ে বিশ্ববাবুর পায়ে
বিঁধলো কী যে অন্ধকারে ঝাপসা চোখে বাঁয়ে।

ভিজলো কোণা দারুণ ব্যথায়, রক্ত ঝরে চুয়ে
উলটে গেল নখটা বুঝি আলতো হিসেব ছুঁয়ে।

কুড়িয়ে নিয়ে দেখলো পাথর, যেই না ফেলবে ছুঁড়ে
বললো ভেতর,থাক না কাছে রাখিস না খুব দূরে।

কী ভেবে মন রাখলো পাথর যত্নে পকেট ভরে
হতেও পারে দেবতার বাস পাথর সেজে ঘোরে।

বাড়ি ফিরে ব্যথার জ্বালায় পাথর গেল ভুলে
গিন্নী বলে লাগলো কিসে? বলবে সেটা খুলে?

পড়লো মনে ভুলের কথা,গিন্নী পকেট ছুঁলে
বিশ্ববাবু বলেন কেশে পা টা গেছে ফুলে।

ভুললে দিতে তুমিও কি,ওষুধ আমার পায়ে?
যন্ত্রণাতে মরছি আমি, ওই পাথরের ঘায়ে।

ওষুধ দিয়ে গিন্নী এবার পাথর হাতে আলোয়
আস্তরণের ফাঁক দিয়ে এক জ্বলছে আলো কালোয়।

গিন্নী বলে দেখিয়ে নিও অন্য কারোর চোখে
হচ্ছে মনে পাথর দামী, বেড়িয়ে এলো মুখে।

মূর্খ আমি,বুঝিনা কিছুই,তবুও কেন মনে
হতেও পারে অন্য কিছু ঝাপসা সবই কোণে।

উঠলো হেসে বিশ্ববাবু, গিন্নী রাগে ফোঁসে
মান ভাঙিয়ে দিলেন কথা, আর থেকো না রোষে।

বিশ্ববাবু পাথর সাথে, ঘোরেন সারা বাজার
হাসির খোরাক হলেন সবার, শব্দ ভাসে হাজার।

সস্তা পাথর বলে সবাই,বিশ্ব ভাবে শেষে
বেকার সময় নষ্ট শুধুই ভালোবাসায় ভেসে।

সারাদিনের কষ্ট মেখে ফিরলো যখন বাড়ি
গিন্নী তখন এলো চুলে পান মুখে লাল শাড়ি।

মুখটা দেখেই বুঝলো মনে, ভুল কি শুধুই চোখের?
অভিজ্ঞতা হেরেই গেল, কষ্ট বাড়ে বুকের।

সবটা শুনে গিন্নী বলেন,যাওনি নি কেন আগে?
জহুরি ছাড়া বুঝবে কে আর আসল নকল ভাগে।

বেহাল হয়ে, বিশ্ববাবু সোনার দোকান ভোরে
পাথর ঘষে জহুরি বলেন, ভাগ্য দাঁড়িয়ে দোরে।

আসল হীরে, মূল্য অনেক, কয়েক লক্ষ্য টাকা
বিশ্ববাবু অবাক মুখে,খুশির আবেশ মাখা।

আলোর ছটায় চোখ ধাঁধালো, বিস্ময় ঠোঁট জুড়ে
বুদ্ধি রাখে গিন্নী অসীম কষ্টের দিন দূরে।

দেখলো চেয়ে হীরের জ্যোতি, গিন্নীর মুখ হাসি
বললো ভেবে জহুরি ছাড়া হীরের মূল্য বাসি।

শাক সবজির বাজার কি আর হীরের মূল্য বোঝে?
বেকার পাথর ভেবে ছুঁড়ে, চকচকে কাঁচ খোঁজে।

হাল ছাড়লেই উল্টো পথে, ভাগ্য যেত হেঁটে
বেহাল হয়েই থাকতে হতো, মুখে কুলুপ এঁটে।

শব্দ যেমন সঠিক প্রয়োগ মূল্য বুঝে ঝরে
ভুল প্রয়োগের মাপকাঠিটা, আলগা মুঠো ধরে।

উপচে পড়া খুশির আবেগ আদর ছুঁয়ে ঘরে
সোহাগ ভরা ডুব সাঁতারে শরীর দুটি জ্বরে।

হাল না ছেড়ে কর্ষণে সুখ বিশ্ববাবুর বুকে
গিন্নী কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে শান্তি ছুঁয়ে সুখে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *