সম্পাদকীয়

সম্পাদকীয়

। হয়তো এমন করে।

শোন , শুধু খুন করলে হবে না।
ভারতকে ভাগ করে দিতে হবে।

‘আজ্ঞে, সে তো হয়েছে সেই কবে, সাতচল্লিশে।
তবেই না জ্বাল দেওয়া নিশিদিন লাশ চাওয়া ধর্মের বিষে!
এখন আর নতুন কী ভাবে..’

ওফফ! মাথামোটা, এতটা কাঁচা হলে হয় কি হিসাবে!
শোন, ভারতীয় মারলে গর্জে উঠবে তবে পুরো ওই দেশ,
সে দ্বেষে আগুন দিয়ে আমাদের দেশ করি শেষ,
তেমন ইচ্ছে নেই ।
এমন চালবো দান,
যাতে নিজেরাই হবে নিজেদের যুযুধান,
ওই যে রে,
ওদের সে পাঁচ ভাই কাহিনীর মতো।
মিলমিশ হলে কি সে যুদ্ধ হতো?

বটে বটে! হুজুরের মগজের ধার,
কত যে কাটতে পারে, প্রমাণ পেয়েছি বারবার।
কৃপা করে খোলসা করুন ,
ক’টা মোটে খুনের দরুন
কীভাবে করবো ভাগ দেড়শো কোটির ভূমি ওই,
ফাঁকতালে নেপো হয়ে আমরা সাপটে খাবো দৈ।

শোন! এর নাম হলো সন্ত্রাস,
কিছু নয়, ব‍্যবসা এ খাস,
মূলধন যার হলো কয়েকটা নিরস্ত্র মানুষের লাশ।
কিন্তু মূলে কী হবে ভুলে গেলে সুদ?
শোক এক অমোঘ ওষুধ,
যা দিয়ে সারাই হয় মনের দূরত্ব বাড়া তাবত ফাটল,
একজোট হয়ে যায় বিরোধী দুদল,
কবরস্তান আর শ্মশানের মতো মানুষকে মেলাতে পারেনা কিছু আর..
সেই শোক বিভাজন হওয়া দরকার।

আজ্ঞে, গোস্তাকি মাফ,
ওখানে মরবে যারা তারা ভারতীয় সব,
তামাম ভূমিতে হবে একই অনুভব,
কার্গিল-তাওয়াং-কছ-কন‍্যাকুমারী,
সে শোক তো ঢুকে যাবে সকলের বাড়ি,
যেমন ঘটেছিলো সেই ছাব্বিশে নভেম্বর, দুহাজার আটে
সে একতা কী উপায়ে ঘাঁটে?

ওফফফ! শোন ওরে বোকারাম গাধা,
কী জন‍্য তুই এক সামান‍্য পেয়াদা,
আমি সুদূরে বসে তোর হ‍্যান্ডলার,
কারণ তো কিছু আছে তার।
বলি , তুই তো মুসলমান, নাকি!

এ আবার কেমন সওয়াল!
নামাজে দিই না কোনো ফাঁকি,
নিয়মিত রোজা রেখে থাকি,
তার ওপরে আপনারাই তো শেখালেন হুজুর,
এটাই আল্লাহর পথ,
বেহেস্তে ইন্তেজাম আছে বাহাত্তর হুর।

বাহ! ওর বেশি ভাবিস না যেন একবিন্দু।
এইবারে শোন, কী করতে হবে।
ওখানে মারবি তুই বেছে বেছে হিন্দু।
শুধু মারলে হবে না, সেটার ঘোষণা করে যাবি,
কলমা’ জিগেস করে দরকারে সমক্ষে প‍্যান্টও খোলাবি,
মোটমাট ,
সকলেই যেন জানে, তুই মারছিস হিন্দু কেবল।

আজ্ঞে হুজুর,
তাতে হয়ে যেতে পারে সেমসাইড গোল।
ভারতীয় মুসলিম তো আমাদের পক্ষে না,
জাপটে ধরবে এতে টেনে যে বক্ষে না
সেটা তো এতদিনে আমরা জানি।

ওখানেই তো আছে মূল শয়তানি।
ভারতীয় হিন্দু ভাববে
ভারতের ইসলামীদের থেকে তারা টার্গেট বেশি,
সেখানেও আছে বহু বিধর্মী-দ্বেষী,
এ সুযোগ লুফে নিয়ে সেটাকেই করবে প্রচার,
ভারতীয় মুসলিম শিকার থাকবে হতে সেসব খোঁচার।
বিপরীতে,
মুসলিমও ভাববে কলমা বললে তারা বেঁচে যেতে পারে,
দেশের মধ‍্যে দেশ, দ্বেষের ওপরে দ্বেষ,
দেখা যাক কতদূর বিভাজন বাড়ে।

বাহবা ! বাহবা হুজুর! এবার করতে যাবো খুন,
তার আগে একবার আমাকে বলুন,
এমন নরক যার মাথা জুড়ে থাকে,
আল্লাহর বান্দা কি বলা যায় তাকে?

আহ! এসব বেকার সওয়াল! যা এখন ছড়াতে সে বিষ,
প্ল‍্যান এ , প্ল‍্যান বি , প্ল‍্যান সি,
সাফল‍্য আসে যেন সেটা দেখে নিস।

দাস-খুনী চলে যায়। সুদ পাওয়া ধান্দায়,
আল্লাহ কোথায়!
ওই যে কাঁদেন দূরে, হিংসায় অসহায়..

চারদিক দেখে নিয়ে, মুখোশটা খুলে নিয়ে হাসে ইবলিশ।

আর্যতীর্থ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *