মুক্তগদ্য || আগুন || © মোনালিসা সাহা দে

মুক্তগদ্য
|| আগুন ||
© মোনালিসা সাহা দে
যতটা কাছে টানো আমায়, ঠিক ততটাই দূরে আসি বার বার। এত তাপ আমার সহ্য হবে না যে! স্নিগ্ধ বাতাস, তার কোমল কল্পছবি আমায় আরও সরে আসতে বলে। আমিও পিছিয়ে ফিরে যেতে চাই শীতল স্রোতস্বিনীর কাছে। এক পা, দু পা পিছু হঠতে থাকি, তবু বারবার তোমার দিকেই ফিরে ফিরে তাকাই। নাঃ! আবার সেই একই কাছে টানা! ছুটে গিয়ে লেলিহান দহনেই রিক্ত রঙ খুঁজি।
আগুন, তোমার রূপে কেন এত উগ্র লাল? তুমি কেন মিঠে রোদ হয়ে আসতে পারো না? শান্ত হয়েও ধিকিধিকি জ্বলতে থাকো। কিসের এত অহং? আমি একে একে সকল ভাবজগৎ ছিন্ন করে নতুন মনে স্থির করি অনেক অনেক দূরে সরে যাব, তোমার লালিমা চাই না আমার আর। লাল কি আমি পাব না রাঙামাটির আশ্রয়ে? তুমিই বলো! লাল কি আমি পাব না গোধূলির সাহচর্যে? তবে?
ঠিক তখনই অনুভব করি তোমার এ আলোয় বসন্ত আছে। যে বসন্তকে এ ভুবন নিজের করে পেতে চায়, সেই বসন্ত শুধু তোমার মধ্যেই আছে। কিন্তু সত্যিই কি তাই? নাকি এ সকলই প্রবোধমাত্র? আসলে তোমার রূপে আমি সূর্য্যকে দেখেছি। তোমার রূপেই আমি দেখেছি মহাজগতের সকল তারকাকে। হ্যাঁ, হ্যাঁ, তুমিই সূর্য্য। তুমিই রাতের আকাশে ছড়িয়ে থাকা সকল উজ্জ্বল হীরে। প্রকৃতি যে কখনোই নক্ষত্র বিনা সম্পূর্ণ হয় না। হয় কি? তাই তো আমি ফিরে ফিরে তোমার অমোঘ রূপে মোহিত হয়ে তীব্রতর আলোতেই স্নাত হই… বার বার, আজও!