পূর্ণকে শূন্য করার প্রতিযোগিতা **** গীতশ্রী সিনহা

পূর্ণকে শূন্য করার প্রতিযোগিতা
গীতশ্রী সিনহা
অন্ধ বিশ্বাসে ফুল চড়িয়েছি নতুন সূর্যোদয় দেখবো বলে !
মধু লোভীদের দুরন্তপনায় ঘোর কলি !
ভয়কে জয় করতে না পারার খেসারত দিয়েছি গুনে গুনে।
দিয়েছি একশো আট-টা বেলপাতা রক্তের লাল দাগে,
মায়া দেখাওনি কখনো !
আমাদের মানত করা সাষ্টাঙ্গ শরীরগুলো মাড়াতে মাড়াতে
তোমরা নির্বিকার হেঁটে গেছো আকাশে চোখ তুলে !
আর আমাদের বৌ-মেয়েরা হারিয়ে গ্যাছে তোমাদের বাগানবাড়ির সান্ধ্যনগরীতে…
ভোররাতে মাটির গভীরে তাসের সংসার – বাসনা
কীট পতঙ্গের খাদ্য হয়েছে।
তারপর ! তারপর তোমরা…
আমাদের ভিটেয় ঘু ঘু চরিয়ে,
আমাদের জোত – জমি লোপাট করে
দিব্যি নবজাগরণের আলো মেখে
সভ্যতার বারান্দায় এসে দাঁড়িয়েছো !
ঠিক এভাবেই চাপা পড়ে গ্যাছে
বাঘে-গরুতে একঘাটে জলখাওয়ার গল্পটা !
কেতাবী -গবেষকরা আমাদের হাড় খুঁজে পায়নি।
তাই শান্তি নিকেতনে কোনো অশান্তিও হয়নি।
কিন্তু সময় তো কারো বাপের চাকর নয় !
ধর্মের কল তো বাতাসেই নড়ে !
তা-ই তোমাদের শান্তি ঘুচেছে,
ঘুঘুর বাসায় এখন তুমুল কোলাহল !
এবার নেমে এসো পালঙ্ক জোড়া বিছানা থেকে !
তারাভরা আকাশের নীচে বর্ষায় – শীতে
রাত কাটিয়ে প্রকৃতি – প্রেমিক হওয়া যায় কিনা !
খেয়েছো অনেক চর্বচোষ্য,এবার পাত ছাড়ো,
কয়েক শতাব্দীর ক্ষিদে আমাদের পেটে।
আরে বাবা ! হাতে – কলমে যাচাই করেই দেখোনা…
না খেয়ে মানুষ মরছে কিনা ?
দুর্ভিক্ষ নিয়ে সিনেমা করলেই হবে ?
দুর্ভিক্ষের স্বাদ নিতে হবে না ?
পূর্ণকে শূন্য করার প্রতিযোগিতায়
প্রকৃত সংস্কৃতি – টংস্কৃতি শিকেয় তুলে দিয়ে
জেলখানার পাঁচিল উঁচু করছো !
আবার…
সংশোধনাগারের ঘর বাড়াচ্ছো পয়সা চিবিয়ে…
কি হবে এতো ঘর ?
এও কী তবে পূর্ণকে শূন্য করার নতুন খেলা !!!