নববর্ষে তোমার জন্য আমার পত্র, কলমে রাখি চ্যাটার্জি।

প্রিয়তম।
তোমার চিঠি পেলাম। তুমি চিঠি লেখো, না ছবি আঁকার জন্য কলম ধরো তা আমি বুঝতে পারিনা।
আগামী কাল নতুন বছর, ছোট খোকা আমায় একখানা হলুদ রঙের ফুল তোলা কাপড় কিনে দিয়েছে, আমি বললুম ” তোমার বাবার জন্য একখানা চওড়া পাড়ের ধুতি নিয়ে এলে পারতে ? ”
উত্তরে ছোটো খোকা বললে ” মা,,,, আর তো কটামাস,,,, তুমি দেশের বাড়িতে ফিরে গেলে তোমার সাথে পাঠিয়ে দেবো ” । আমার মন তাতেই ভরে গেলো।
আজ ভোরের আলো ফোটার আগে,,, আমি গিয়েছিলাম খোকা দের আবাসনের সামনে ঐ সরু পিচ ফেলা রাস্তাটি ধরে কিছু টা হে৺টে এলুম। জানো,,,,, বহুদিন পর পুরোনো স্মৃতি বহন করে আমি একেবারে হারিয়ে গিয়েছিলুম।।
সেই সবে তখন তোমার সাথে আমার বিয়ে হয়েছে,,,, ভোর বেলায় তোমার পাওয়া রেল কোয়ার্টার এ একটু দুরে ,,, সেই বকুল ফুলের গাছ থেকে ভোরের আলোয় ফু তুলতাম,,, তুমি বেশি তুলতে না,,, তোমার ছিলো শুধু দুষ্টুমি, কখনো আমার খোপা খুলে দেওয়া কখনও পেছন থেকে জড়িয়ে একটা আলতো চুম্বন। আমার কিন্তু ভালোই লাগতো জানো। ফিরে এসে দৈনন্দিন জীবনে আবার ফিরে আসা। অবাক লাগে আমাদের মধ্যে কোনো বিশেষ ধরনের কোনো চাহিদা পূরণের আকাঙ্খা ছিলোনা। তবে আজ এই মধ্য বয়সে এসে আমি আজও ভুলিনি,,,,,, প্রথম রাতে তোমার আবদার ছিলো একটি,,,,, আমাদের তিনটি সন্তান হবে,, আমি খুব রেগে তোমাকে চিমটি কেটে বলেছিলাম,,,, না,,, একটি।
আমার কথাই শেষ পর্যন্ত তুমি মত প্রকাশ করলে।
এই দেখো লিখতে লিখতে কতো রাত হয়ে গেলো, সারাদিন একটুও চিঠি লিখবার সুযোগ পাই না। দিন যায় রাত যায় কিন্তু জানো তোমার সাথে স্মৃতি আমার সঙ্গ ছাড়ে না। তুমি তো অনেক বই প্রকাশ, পৃথিবীর বিভিন্ন ধরনের ঘটনা লিখে আমার কাছে তো অনেক বড়ো পন্ডিত। বলতো আমার মতো স্মৃতি বহন করে তোমার ও কি আমাকে মনে পড়ে???
যাক এবার আর রোমান্টিকতা নয়। আগামী কাল নববর্ষ। পাশের বাড়ির পুটু যে তোমাকে রোজ ওদের বাগানের,,,, লালদোপাটি, যূ৺ই, সাদা টগর দিয়ে যায়, তুমি কিছু মিষ্টি এবং তার মধ্যে অবশ্যই দেবে গোলাপি রঙের সন্দেশ,,,, পুটুর প্রিয়। ওওওও হ্যাঁ কালকে একটি নতুন জামা গায়ে দেবে। তোমার আসবার অপেক্ষায় রইলাম। তোমার,,,,,
ইতি
আমি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *