* পুজোর ঘন্টা * গীতালি ঘোষ

* পুজোর ঘন্টা *
গীতালি ঘোষ

পুজো আসছে’……..
এই বিষয় নিয়ে লিখতে গিয়ে মনপবনের নাওকে ভাসিয়ে দিয়েছিলাম কল্পনার আকাশে। এই দুর্যোগপূর্ণ পৃথিবীতে মা কেমন ভাবে আসবেন জানিনা। কিন্তু আমার মন কিছুক্ষণ কৈলাসে ঘোরাফেরা করে এল। তারই দু চারটে ছবি আজকে বুনে দিলাম স্বপ্নের মত। বন্ধুরা, কেমন লাগল বোলো।

মনটা কেমন ছটফট করছে। কোথায় যেন যেতে চায়। ইচ্ছেডানায় ভর করে আকাশ পথে যাত্রা করি তবে। এবার আবার গন্তব্য হোক কৈলাস।

পথ তো আমার চেনাই। মেঘের সাথে ভেসে ভেসে চলেছি শিব পার্বতীর গৃহাভিমুখে। সুন্দর সুবাসিত দিব্যলোক, পথে পথে পাথর ছড়ানো। সুন্দরী দুই কন্যা কী করে? এরা দেখি আপন কক্ষ পথেই ঘোরাফেরা করে। মহাদেবের দুই কন্যা, অপরূপ সুন্দরী। আসন্ন মর্ত্যভ্রমণের চিন্তায় উদগ্রীব। মর্ত‍্যধামের আয়োজনের রকম সকম নিয়ে দুই বোনের নানান আলোচনা। একথা সত্যি যে কৈলাসে এরা কখনোই বিলাস বৈভবের মধ্যে থাকতে অভ্যস্ত না। নিতান্ত সাধারণ ভাবেই এরা দিনযাপন করে। সেকারণেই মহাদেব-কন্যারা মর্ত‍্যভূমিতে যেতে উৎসুক। সেখানে পৃথিবীর মানুষ সাদরে তাদের বরণ করে নেবে,সাধ্যাতীত যত্নে এদের আপ্যায়ন করবে। দুই কন্যার কথোপকথনেই বোঝা যায় যে এরা পাঁচ দিনের জন্য মর্ত‍্যভ্রমণে উন্মুখ।তাই নিজেদের জিনিসপত্র গুছিয়ে নিতে ব্যস্ত।

এবার ভোলানাথের ঘরের পানে উঁকি দিয়ে দেখি, শিবের মুখমণ্ডল গাম্ভীর্যে ভরা। কী হল আবার? নতুন কোনো অশান্তি নাকি?
একটু পরেই ব্যাপার বোঝা গেল। প্রাণপ্রিয়া যাবেন পিতৃগৃহে…আসন্ন বিরহের চিন্তায় মহাদেব গম্ভীর !পার্বতীর চোখে মুখে আনন্দ। বছরকাল পরে যাবেন বাবা মায়ের কাছে,আদর আপ্যায়নে ভরে উঠবেন…. আর এখন পতিদেবের এই মূর্তি? ভালো লাগে না একটুও। আনন্দ করে যাবেন কোথায়, তা না,স্বামীর মানভঞ্জন করতে হবে? আর পারা যায় না, সারা জীবনের সাংসারিক কষ্ট ছেড়ে দুদিন একটু জিরিয়ে নেবেন, তার জন্য কত ঝামেলা!! যাওয়ার আনন্দে মাতবেন, না স্বামীর মনোরঞ্জন করে তাকে শান্ত করবেন পার্বতী, নিজেই এখন ভেবে ঠিক করুন। এখানে আর থাকা ঠিক নয়। কৈলাস থেকে পালাই এখন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *