দুশ্চরিত্র দুগ্ধ –প্রণব ভট্টাচার্য্য
দুশ্চরিত্র দুগ্ধ –প্রণব ভট্টাচার্য্য
বাড়িতে দুধ কেনা হয়েছিলো কোন এক বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে। “হয়েছিলো” বলছি কারণ এখন আর দুধ কিনে খাবার বা খাওয়াবার মতো রোজগার নেই। পেইনফুল সনের নামই পেনসন, মধ্যপদলোভী কর্ম কারক। যাইহোক, কার কি উদ্দেশ্য ছিলো জানা নেই। কিন্তু, রান্নার বৌমা রান্না করে চলে যাবার পরেও যখন দেখলাম পকেট থেকে নগদে কেনা প্যাকেট জাত দুধের অবস্থা পাথরের পাটার ওপর কোলাব্যাঙের মতো হাত-পা ছড়িয়ে শুয়ে আছে, তখন মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে গেলাম যে এতক্ষণে ধুধের চরিত্র নষ্ট হয়ে গেছে। তবু মধ্যবিত্ত সুলভ মানসিকতায় শেষবারের মতো ফুটিয়ে দেখবার চেষ্টা করলাম। এবং যদিও সুতরাং অথবা কিন্তু তথাপি আমার চোখ ফুটিয়ে দিয়ে দুধ ফুটে যেতে লাগলো। আনন্দে উথলেও উঠলো। দুধটা কেটে গেলে যতটা ব্যথিত হতাম, তার থেকে হাজার গুণ ব্যথিত হলাম দুধটা কাটলো না দেখে। মানে আমার বিশ্বাসের ঘোর কেটে গেলো আর কি? বাধ্য হয়ে একটা গোটা পাতিলেবু মানে গোটা অবস্থায় নয় চার টুকরো করে কেটে প্রাণপণে নিঙড়ে সব রসটুকু দুধে দিলাম । তারপরে চোখ ছানাবড়া করে দেখলাম দুধ কেটে ছানা তৈরি তো হলোই না, বরং বেশ ফুটে ফুটে ঘন হতে শুরু করলো।
এমত অবস্থায় সেই দুধ নামক পদার্থটিতে দুটো সন্দেশ সহ ফুটিয়ে ক্ষীর করে রেখেছি। যদি কোন সহৃদয় বন্ধু খেয়ে বলেন যে এই পদার্থটি পূর্বে কি ছিলো এবং বর্তমানে কি দশা প্রাপ্ত হইয়াছে, তাহলে কৃতার্থ হইবো।