হিজাব গজব কলমে — কাজরী বসু
হিজাব গজব
কলমে — কাজরী বসু
শিখ সম্প্রদায় যে পাগড়ি পরে সব জায়গায়,সেটাও প্রথম থেকে মানা উচিত হয়নি। সেও তো ধর্মীয় রীতিই। তাই বা ইউনিফর্মের মধ্যে মানা হবে কেন! তাহলে তো দিগম্বর জৈনরা ধর্মীয় রীতির দাবি তুললে তাও মানা হবে!
আমরা,ভারতীয়রা আসলেই হিপোক্রেট। আমাদের শুধুমাত্র নিজেদের সুবিধাই দেখার। শিখরা যখন পাগড়ি পরে,তখন আমরা বলি আহা এ তো ধর্মের বিষয়, আমি বলার কে! পাগড়ি কি পাঞ্জাব ছাড়া অন্যত্র ইউনিফর্মের অঙ্গ? মোটেই নয়। কিন্তু আমরা তা নিয়ে বলিনি,বলব না।
ইউনিফর্মে যা আছে তাই আছে। তার মধ্যে মাথার ঘোমটা,পাগড়ি, হিজাব, বোরখা এসব কোনোটারই অনুমোদন পাওয়া উচিত নয়। কিন্তু আমরা সবার বেলায় বললেও পাগড়ির বেলায় স্পিকটি নট। কারণ একটাই। পাগড়ি হলো পুংলিঙ্গ। পুরুষেরই পোশাক। আমরা তাই কিছু বলব না।
আমরা বলব নারীদের বেলায়। তুই এটা পরবি,তুই এটা পরবি না। কারণ আমি বলছি তাই। আমি তখন পুরুষের পক্ষে। কেউ তাদের সাপোর্টও করব অবশ্য,কারণ তখন আমার ভোট চাই। আমি তখন ইউনিফর্ম নয়,ধর্মের পক্ষে। একটা বিরাট সম্প্রদায়কে তুষ্ট করতে পারলে আমি একশো থেকে দুশো হব,জিরো থেকে দশ হব। এই বা কম কী!
যুগ যুগ ধরে এই হিপোক্রেসি শুধু গোলমালের জন্মদাতা। সেকুলারিজমের নামে এ রাষ্ট্র একটা ধর্মসংকট আর সংঘাতকেই পরিপুষ্ট করেছে। আমরা সেই সংকটকে রক্তের মধ্যে প্রবাহিত করে চলেছি।
হিজাব নিয়ে চারদিক এখন সরগরম। প্রশ্ন তো অবশ্যই ওঠা উচিত কেন একটা ইন্সটিটিউট একটা ধর্মীয় পোশাককে অনুমোদন দেবে। কিন্তু সেই সঙ্গে হিজাবধারিণীরা যদি প্রশ্ন তোলে, রাষ্ট্রের সর্বত্র পাগড়িকে কেন অনুমোদন দেওয়া হয়,সেও তো একটি বিশেষ ধর্মের মাথা ঢাকারই পরিধেয় মাত্র,তাহলে তার কী উত্তর হবে?
হিজাব গজব ✍️কাজরী বসু