অস্তরাগ শাওন,

অস্তরাগ
শাওন,
অনেক না বলা কথাইতো জমা হয়ে আছে,
রচনা করতে পারি তোমাকে নিয়ে একটা
জয়দেবের “গীতগোবিন্দের” মতন প্রেমকাব্য ৷
আজ ও মনে পরে,
“প্রথম দেখায় কথার শ্রাবন
বানভাসি সেই কথার প্লাবন
ভাসিয়ে দিতো কথার নদী
তৈরী হতো গহীন সাগর”
তোমার সৌন্দর্য্যের সুবাস করতো আবিষ্ট৷
হৃদয়, মস্তিষ্কের সূক্ষ অনুভূতিতে
জলতরঙ্গের সুরের মূর্চ্ছনায়
শুধু তোমার সুরই বাজতো৷
সজ্ঞানে অজ্ঞানে বিরাজ করতে শুধুই তুমি
কখনো উচ্চৈঃস্বরে প্রেম নিবেদন করিনি,
অনুচ্চারেই বলে গেছি অনেক কথা ।
তোমার উজাড় করা বিন্দু বিন্দু প্রেমসুধায়,
কানায় কানায় পূর্ণ হয়েছিল হৃদয়কলস ।
হারাবার ভয়ে উগ্র আগ্রাসনের
বেষ্টনীতে বাঁধতে গিয়ে
হারিয়ে ফেলেছিলাম তোমাকে৷
অভিমানে আহত হয়ে সরে গিয়েছিলে তুমি ।
বুঝিনি প্রেমের প্রজাপতি উড়ে যায়
জাপ্টে ধরতে গেলে ।
তাকে বসতে দিতে হয় গায়ে ।
যখন মনের ঘরে প্রশান্তি আসে
এমনিই বন্ধ হয়ে যায় ডানা ঝাপ্টানো ৷
সমর্পিত হয় কবোষ্ণ আলিঙ্গনে৷
তারপর কেটে গেছে দীর্ঘ সময়,
“কথার তোআর হয়নি প্রকাশ
অভিমানের মেঘ জমেছে
হাজার হাজার বছর ধরে
বছর বছর বরফ পরে
কত কথাই হারিয়ে গেছে
হিমবাহর বুকের নিচে”
প্রকৃতি শুন্যতা পছন্দ করেনা ।
সময়ের ক্ষত ভরিয়ে দিয়েছে সময় ।
আজ সূর্যাস্ত ঢেলে দিলো এত রং,
মুগ্ধ হয়ে দেখছিলাম সাতরঙা রামধনু
আর ভাবছিলাম তোমারি কথা ।
আজ জীবন সায়াহ্নে সাতরঙে রাঙা হয়েছিল আমার অন্তর ।
তোমার অন্তরঙ্গ মুহূর্তের সঙ্গী হয়ে আরও অন্তরঙ্গ মনে হচ্ছিলো
আজকের শেষ বিকেলের অস্তরাগ৷
উষ্ম বুকের উষ্ণতাতে বাষ্পীভূত অশ্রুধারা যেমন হয়ে যায় মেঘ ,
আবার সোহাগখাকি সোহাগ পেলে ফিরে আসে অঝোর ধারায় ,
তেমনই সীমাহীন আবেগের সফেন ঢেউয়ে
ফিরে ফিরে আসছিলো হারানো সুখস্মৃতিগুলো
“হিমবাহের তুষার দেয়াল
জলের ওপর পড়ে ভেঙে
বুকভাঙা তার গভীর কথা
বেরিয়ে আসে ভাঙার পরে
টুকরো টুকরো জমা কথা
ভাসতে থাকে সাগর জলে”
গহন মনে অনুরনিত হচ্ছিল,
শুধু একটাই অনুভব
তুমি একলা নয় শাওন,
আমিও পথ চেয়ে বসে আছি৷
সফিক আহমেদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *