**আমার লক্ষ্মী**

**আমার লক্ষ্মী**

এক বন্ধুর সাথে কথা হচ্ছিল।
বলে, ‘তোমার বাড়ির লক্ষ্মীর ছবিতে মালা পরালে?’
আরে ভাই, রাতদিন সব কাজ সামলে, ঘরের সবকিছু ঠিকঠাক রাখছি, আর একটা ছবির এত দাম,কেন!
এই মাগ্গি গন্ডার বাজারে,কত মানুষ না খেয়ে আছে, অকাল বৃষ্টিতে সবকিছু তোলপাড়, তার সাথে অতিমারীর সঙ্গত, প্রতিবেশী দেশের অসংখ্য লক্ষ্মীরা অসহায় ঘরছাড়া… এততেও চললে চলুক পুজো পাঠ, আমি নেই কোনো ছবিতে….. আমি নেই কোনো মূর্তিতে… আমি নেই কোনো আপত্তিকর পাঁচালীর দুলুনিতে!

আসলেই লক্ষ্মীর লক্ষ্মীত্ব একটা ধারণা মাত্র! ( সম্পূর্ণ আমার মত,কারো ধর্মমত ছোট না করেই বলছি) সেই ধারণা ছেলে মেয়ে নির্বিশেষে সঠিক যাপনের পথে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে কাজে লাগে। লক্ষ্মীপুজোর নামে দেবীর মূর্তি বা ছবিতে মালা পরিয়ে দেদার চাইবো .. ধন দাও,মান দাও,যশ দাও অর্থ দাও, শিক্ষা দাও.. সব সব ভিক্ষা দাও…!
কেন!
প্রচলিত হলো- মেয়ে হয়েছো,আস্তে চলো,আস্তে বলো,জোরে হেসোনা, আবেগে ভেসোনা, নিজের মত পোষণ কোরোনা, চিরকাল পুরুষদের পায়ের কাছে করজোড়ে বসে থাকো! ( লক্ষ্মীর পাঁচালীর বক্তব্য অনুযায়ী, এবং এমনিও এমন ঘটনা অনেক ঘটে!)
পারিনা মানতে,তাই আমি তথাকথিত লক্ষ্মী না। আত্মসম্মানবোধ টুকু নিয়েই যেমন বাঁচি, বাঁচতে চাই বাকি জীবন!
মেয়েকেও বলি,মান আর হুঁশ এই দুই নিয়ে চললেই মানুষ,তার সাথে আত্মসম্মানবোধ!আর অন্যের প্রতি সমবেদনা…. এইসব ভুলিসনা বাবু। এইসব মেনে চললে কখনও কোনো মূর্তির প্রয়োজন পরবেনা,লক্ষ্মীত্ব প্রমাণে!
আর একটা কথা, লক্ষ্মীমন্ত মেয়ে হিসেবে,বিয়ে হয়ে বরের বাড়ি এসে, কতশত লক্ষ্মী কে আকছার শুনতে হয়,’আমার বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাও!’এমন লক্ষ্মী মেয়ে যত কম হয়,তত ভালো! “মেয়েদের নিজের বাড়ি থাকেনা” এই কথা মিথ্যা প্রমাণ করুক সব লক্ষ্মীরা!

আর লক্ষ্মী মা আমার, নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে, গৃহহীন,বস্ত্রহীন, অন্নহীন লক্ষ্মীদের যতটা পারিস দেখিস, এইটাই চাই!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *