শৈশবের স্বপ্ন কলমে: অর্ণব পাল

শৈশবের স্বপ্ন
কলমে: অর্ণব পাল

শৈশবের স্বপ্নরা আজও বড়ো ইতি উতি চায়। সমষ্টিগত ভাবে তাদের অবয়ব অশোক স্তম্ভের ন্যায়। ভেজা রোদ্দুর, ছেঁড়া মেঘ যেনো অশ্রুসিক্ত চোখে মরচে ধরা মেহেরাউলির লৌহ স্তম্ভ। পুকুরে হেলে পড়া গাছ, শীতল জলের দীঘি, জটা ধারী বট আসলে সেই স্বপ্নের আবছা প্রেক্ষাপট। ৩০ বছর ধরে খাল খনন করা বৃদ্ধ বা ২২ বছর ধরে পর্বত কাটা প্রৌঢ় যেনো অঙ্গুলি নির্দেশ করে ব্যর্থতার পাহাড় চূড়োয়। তারা বোঝায় স্বপ্নের প্রয়োজনীয়তা কিন্তু ধারণ করতে অক্ষম আধার। মাঠ ভরা কাশফুল, অষ্টমীর ঢাক হৃদয়ে দামামা বাজিয়ে , কুরে খাওয়া অগ্নি প্রজ্বলিত করে পঙ্গু মানসে যেনো ঝামা ঘষে দেয়। আসলে স্বপ্নটা তো শুধু স্বপ্ন নয়, যেনো জননীর অপার্থিব রূপ। গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস এর, বংশ পরম্পরার এক যোগসূত্র স্বরূপ। মন বিক্ষিপ্ত হয়, গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসাতে মন চায়, কিন্তু ওই যে “আমি যাহাকে কেন্দ্র করিয়া ঘুরি, না পাই তার কাছে যাওয়ার অধিকার, না মেলে দূরে যাওয়ার অনুমতি।”
পোড়ামাটির মন্দির, ভগ্নপ্রায় জমিদার বাড়ি, পাগলা বাউলের গান, শীর্ষেন্দুর গল্প, এরা প্রত্যেকে, আসলে এরা প্রত্যেকেই উপলক্ষ্য, আসলে স্বপ্নই আসল, স্বপ্নই লক্ষ্য। তাই দশমী সব কিছুর সমাপণ নয়, সবের সলিল সমাধি নয়, আসলে আগামীর বোধন, কালের গতি উল্টানোর ধনুক ভাঙা পণ।
“তস্মাদজ্ঞানসম্ভতং হৃৎস্থং জ্ঞানাসিনাত্মনঃ।
ছিত্ত্বৈনং সংশয়ং যোগমাতিষ্ঠোত্তিষ্ঠ ভারত।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *