সরকারি উদাসীনতায় আদিবাসী গ্রামে পৌঁছায়নি উন্নয়নের ছোঁয়া, দীর্ঘদিন অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটছে অনাথ তিন শিশুর

২২শে জুলাই, বালুরঘাটঃ হাজারো প্রতিশ্রুতির পরেও বালুরঘাটের ভাটপাড়া পঞ্চায়েতের ডাঙ্গীর উত্তরপাড়া এলাকায় পৌঁছায়নি সরকারি সুবিধা। অনুন্নয়নের চিত্র ফুটে উঠেছে গ্রামের রাস্তাঘাট থেকে দরিদ্র পরিবারগুলিতেও। সেই গ্রামেই অভিভাবকহীন তিন শিশুর দিন কাটছে অর্ধাহারে-অনাহারে। টিনের ছাউনি দেওয়া ভাঙ্গা মাটির বাড়িতে দিনের পর দিন চরম অসহায় অবস্থায় থাকলেও তাদের প্রতি ফিরে তাকাইনি স্থানীয় পঞ্চায়েত থেকে প্রশাসনের আধিকারিকরা। পুরো ঘটনায় প্রশাসনে চরম উদাসীনতার অভিযোগ তুলে ক্ষোভে ফুঁসছেন এলাকার বাসিন্দারা। প্রতিশ্রুতি নয় অতি দ্রুত অসহায় ওই তিন শিশুর পাশে দাঁড়াক প্রশাসন এমনটাই দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

আদিবাসী পরিবার উন্নয়ন বলতে তেমন কিছু ছিল না। তার উপর বছর দুয়েক আগে মা টুম্পা টুডু ওই তিন শিশুকে ছেড়ে অন্যত্র চলে যায়। পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে যখন মদ্যপ বাবা বাপি বেরাও বাড়ি ছাড়েন। প্রায় ছয় মাস আগে তাদের বাবা বাড়ি ছাড়তে আরও অসহায় হয়ে পড়ে তিন শিশু। তারপর থেকেই দাদু বিসু বেসরার পাঠানো চাল রান্না করে খেয়ে কোন মত তাদের দিন কাটত। পরিবারের সম্বল বলতে ষাটোর্ধ্ব একমাত্র দিদা গুংরী হাঁসদা থাকলেও বর্তমানে তিনি চলাচলের শক্তি হারিয়েছেন । ফলে অভাবী সংসারে পড়াশোনা তো দূরের কথা এখন দুবেলা-দুমুঠো খাবার জোগাড় হয় না তাদের। বাধ্য হয়েই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ভাঙ্গা মাটির বাড়িতে থাকতে হচ্ছে তিন ভাইবোনকে। স্থানীয়দের দাবি যে কোন সময়ে হয়ে মাটির দেওয়াল ভেঙে পড়তে পারে শিশুদের উপর। এমত অবস্থায় প্রশাসন যত দ্রুত তাদের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবে ততই মঙ্গল।

এদিন গ্রামের বাসিন্দা কমল সরেন গণেশ মার্ডি রা অভিযোগ করে বলেন, আদিবাসী গ্রামে কোন উন্নয়ন হয়নি । গ্রামে ঢোকার রাস্তা পর্যন্ত নেই । জল কাদায় পরিপূর্ণ হয়ে থাকে । তারা চান অতি দ্রুত গ্রামের উন্নয়নের পাশাপাশি অসহায় ওই তিন শিশুর দায়িত্ব নিক প্রশাসন।

শিশুর দিদা গুংরী হাঁসদা জানিয়েছেন, মা বাবা ছেড়ে যাবার পর তিন শিশু তার কাছেই থাকত। মাঝেমধ্যে তাদের দাদু চাল পাঠাত, যা দিয়ে কোনরকমে দিন চলত। কিন্তু এখন তিনি চলাচলের শক্তি হারিয়েছেন। এমত অবস্থায় প্রশাসনের সহযোগিতা অত্যন্ত জরুরী।

সাংবাদিকদের কাছে এদিনের এই ঘটনা শোনার পর বালুরঘাট মহকুমার শাসক মুখার্জি জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে অতি দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে অসহায় তিন শিশুর পাশে দাঁড়াবে প্রশাসন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *