মমতার জেলা সফরের আগেই তপনে খুন তৃনমুল কর্মী, দুই গোষ্ঠীর বিবাদে পুড়লো নয়টি বাড়ি, জ্বললো ১৫ টি মোটর বাইকও
![](https://www.dinajpurdaily.com/wp-content/uploads/2019/04/542b16ef-5789-494c-83df-9b7948eb9ff5-1024x576.jpg)
১৫ই এপ্রিল, তপনঃ তৃনমুলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে রণক্ষেত্র তপনের রামপাড়া চাঁচড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের গুল ডাঙ্গা। এলাকায় চললো গুলি, ফাটলো বোমা। কুপিয়ে খুন করা হলো রফিক মিয়া নামে এক তৃনমুল কর্মীকে। ঘটনায় রক্তাক্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরও এক ব্যক্তি। ঘটনার জেরে এলাকায় আগুনে পুড়ে ছাই নয়টি আস্ত বাড়ি, পুড়েছে ১৫ টি মোটরবাইক ও। আতঙ্কে পুকুরে ডুবে জীবন বাঁচালেন নয়টি পরিবারের বেশকিছু মহিলারা। ঘটনার দীর্ঘ ঘন্টা পরেও এলাকায় দেখা মেলেনি পুলিশের বলে অভিযোগ পরিবারের লোকেদের। রবিবার রাতের ওই ঘটনাকে ঘিরে বছরের প্রথম দিনে থমথমে পরিস্থিতি হয়ে রয়েছে এলাকায়। ওইদিন রাতেই ঘটনার খবর পেয়ে তপন থানার বিরাট পুলিশ বাহিনী এলাকায় পৌঁছে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছে। বসানো হয়েছে পুলিশ পিকেটও। মৃত রফিক মিয়া এলাকার তৃণমূল কর্মী সমর্থক ছিলেন বলে দাবি পরিবারের লোকেদের। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, রবিবার রাতে এলাকায় চড়ক মেলা চলাকালীন সময় তৃণমূল কর্মী মফিজউদ্দিন মিয়ার সাথে গুল ডাঙ্গী এলাকার বাসিন্দা বারিক মিয়া ও আলতাব আলীর ঝামেলা শুরু হয়। মফিজউদ্দিন বারিক ও আলতাব সকলেই এলাকার সক্রিয় তৃনমুল কর্মী বলেই পরিচিত । ওইদিন রাতে মেলায় উভয়ের ঝামেলার পর বাড়ি ফিরে মফিজউদ্দিন তার পরিবারের লোকেদের ঘটনা সম্পর্কে অবগত করেন। এরপরেই শুরু হয় দুই পক্ষের মধ্যে গুলির লড়াই ও মারামারি। চলে কয়েক দফায় বোমা বর্ষণও বলে অভিযোগ । যার পরেই বারেক ও আলতাবের নেতৃত্বে প্রায় ৩০০ জনের একটি সশস্ত্র বাহিনী এসে তান্ডব চালায় মফিজ ও তার পরিবারের অনান্য সদস্যদের বাড়িতে। ভেঙে তছনছ করবার পাশাপাশি কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয় নয়টি বাড়ি। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় বাড়ির যাবতীয় সামগ্রীও। ঘটনার জেরে আগুনে ঝলসে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে বেশকিছু গবাদি পশুরও। ঘটনার কারণ নিয়ে মৃত রফিজের পরিবারের লোকেরা তেমন ভাবে মুখ খুলতে না চাইলেও, এলাকায় যে একটি জমির দখল কে ঘিরে বেশ কিছুদিন ধরে বিবাদ চলছিল তা কার্যত তারা স্বীকারও করেছেন। জানা গেছে মফিজের ছেলে শহিদুল মিয়া স্থানীয় এক আদিবাসী মহিলাকে বিয়ে করে। যার পরিবারের নামে থাকা কিছু জমি লিজ ছিল বারেকের কাছে। যাকে ঘিরেই এই বিবাদের সূত্রপাত বলে প্রাথমিক তদন্তে মনে করছে পুলিশ।মৃতের মা লারা বেওয়া জানিয়েছেন তার ছেলেকে বারিক ও আলতাবের দলবল কুপিয়ে খুন করেছে। সাত ছেলের মধ্যে এক ছেলেকে হারালেন তিনি। তাদের বাড়িঘর আগুন দিয়ে সমস্ত কিছু জ্বালিয়ে দিয়েছে। জীবন বাঁচাতে পুকুরে ঝাঁপ দিয়ে রাতের অন্ধকারে প্রাণ বাঁচিয়েছেন। অভিযুক্তদের ফাঁসির সাজা চান তিনি।মৃতের এক আত্মীয় খতেজা বিবি জানিয়েছেন, রফিজকে খুন করেছে বারিক ও আলতাব। তাদের ঘর বাড়ি সব জ্বালিয়ে দিয়েছে তারা। রামপাড়া চ্যাচড়ার অঞ্চল সভাপতি আনসার আলী অবশ্য জানিয়েছেন, একটি মারামারির ঘটনা শুনেছেন। একজন মারা গিয়েছে। তবে এর পিছনে দলের কোনো ব্যাপার নেই বলেই দাবী তার।