#কবিতা :#একজন #নীহার_কান্তি_মন্ডল

#কবিতা :#একজন
#নীহার_কান্তি_মন্ডল
(কবিতাটা লিখেছিলাম প্রায় আটত্রিশ বছর আগে।
শব্দ প্রয়োগ‌ও সেই সময়ের। শব্দ এডিটিং না করে তখনকার আবেগকেই প্রাধান্য দিয়ে পোস্ট করলাম)

সেদিন বিকেলবেলা – – – – – –
আশ্বিনমাসে ছোটনদী তটে, বসেছে পুজোর মেলা।
দলে দলে সবে যায় মেলামাঠে পরণে নতুন বেশ
হাসিখুশি মনে প্রিয়জন সনে, নাহিক দুঃখক্লেশ।

নাগরদোলায় চড়িছে শিশুরা, কেহ বা পক্ষীরাজে
চলে যায় ভেসে বহুদূর দেশে, চেনা অচেনার মাঝে।
বাগ্দীপাড়ার ছোট্ট মেয়েটি, ছেড়া জামাটিরে গায়
এসেছে মেলায় গেঞ্জিটি গায়, সাথে তার ছোট ভাই।
বাঁশি কিনে দিল হাতে যাহা ছিল, সকল পয়সা দিয়ে
তারপর ধীরে বাড়ি চলে ফিরে, ছোট্ট ভাইকে নিয়ে।
ভাইটি যে তার বেজায় খুশি, লভিয়া বাঁশের বাঁশি
ভায়ের সে সুখে মেয়েটির মুখে, দেখা দিল মৃদু হাসি।

কেহ কিনিতেছে পুতুল খেলনা, কেহ বা পুজোর ডালা
ধামা কুলো-পাখা কিনতেছে কেহ,কেহ চূঁড়ি খাড়ু বালা
ঘুরিছে ফিরিছে যুবক যুবতী, সবে হাসি খুশি মন
তার মাঝে শুধু আছি আমি একা, নিতান্ত একজন
আট আনার এক রজনীগন্ধার, মালাটি নিয়েছি হাতে
খুঁজিয়া ফিরিছে আমার দু’চোখ, মিলিতে প্রিয়ার সাথে।
মনের মতন করিয়া যতন, খোঁপায় পরাবো মালা
দেখি মৃদু হাসি ভুলিব আমার, সকল বিরহ জ্বালা।

সহসা হেরিনু তারে—–
সারাটা বিকেল আমার দু’চোখ, খুঁজিয়া ফিরিছে যারে।
হলো চোখাচোখি ক্ষণিকের তরে, তারপরে সব শেষ
যেন চিনিল না কথা কহিল না, ফুরালো সকল রেশ।
জিজ্ঞাসি তারে — কেমন আছো? চাহিল অন্য দিকে
জবাব না দিল পাশ কেটে গেল, নিয়ে তার সাথীটিকে।
দু’বছর শেষে ফিরেছিনু দেশে, কহিব কত না কথা
শুনিল না কিছু শোনালো না কিছু, দিল বুকভরা ব‍্যথা।

চলে গেলে ওরা আমি দিশেহারা, গেলাম নদীর তীর
কেন হেন হলো সবকিছু গেল, ভাঙিল স্বপ্ননীড়।
বান্ধবী তার কহিল এবার, ফিরিয়া অকস্মাৎ
কাল ওরে বিয়ে তুমি সেথা গিয়ে, করিও আশীর্বাদ।
যদিও বা কালো ছেলে বড়ো ভালো, শহরে চাকরি করে
তুমি যে বেকার নাই অধিকার, বিয়ে করিবার তরে।

বান্ধবী তার চলে গেল ফিরে, করিয়া নিমন্ত্রণ
বসে আনমনে আকাশের পানে, চেয়ে থাকে একজন।।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *