■ কমল অভিযান ✍️ সুদীপ্ত ভট্টাচার্য্য

■ কমল অভিযান

✍️ সুদীপ্ত ভট্টাচার্য্য

(১)

সব নদীপথেই ভেসে যায় শোনিত পানসী
বাতাস যেকোন দিক থেকেই যৌগিক
দাঁতের গোপন দরজার কালকূট ঢালবে কি?
আমার পাম্পহাউসের সিসমোগ্রাফ….
আমার অন্ধ লাইটহাউস…..

(২)

ক্ষতবিক্ষত করো, চুরমার করো নাভিটি
শুধু খুঁজে বার করে নিও সেন্টার অফ্ গ্র‍্যাভিটি….

(৩)

একটি নির্জন বিষন্ন গুহা
ফটক বিহীন সুদীর্ঘ প্রতীক্ষায়
সামনের পথ বেয়ে উড়ে যায় স্খলিত বকুল
লালামাখা জিভ নিয়ে গুহা
কেবল সুবাস জমিয়ে রাখে মৃত্যুর……

(৪)

পলাশকাল, এ বাতাসে দুলে ওঠে ব‍্যাথাতুর সাপ
লাভাঘ্রাণ সুঁড়ি পথ খোঁজে কমলকাননের,
প্রতিটি নীল ছোবলে দগ্ধ অন্তর্বাস
পাতাল প্রনয়ী চোখ, হাজার তারার ভীড়ে তারা খসা দ‍্যাখে
ধ্বংস হয়ে যাক বাতাসের ঘাত
অদৃশ্য আততায়ীর বেশে
সাপের শরীর বেয়ে ওঠে হলাহল নেশা
হোক পরোয়ানা মৃত‍্যুদূত, জন্মসুখ…..

(৫)

চৈতন্য হোক মেঘের, বিন্দু বিন্দু ঝরে কামরস
সপ্তাশ্ব বাহিত হয় আগুন
পুড়ে যায় পুড়ে যাক সব, জড়ো করে নিও ছাই
অঞ্জলী ভরা থাক প্রেম
আলোর প্রকাশ উদ্ভাস, নাড়ী ছিঁড়ে ছিঁড়ে ঊর্দ্ধমূখী গগন
সম্ভোগ পূর্ণ হলে সরোজ গর্ভে মধুবাস
তোমার আঙুল বিলি কেটে দিক দোতারা সুর
অন্তর্লীন চোখ, পাখোয়াজে দ্রিমি দ্রিমি কষাঘাত…..

(৬)

জীবন জিজ্ঞাসা অথবা জিজ্ঞাসায় জীবন
তলপেটে গ্রানাইট, কার খুলে গেল ভার্টিব্রা
প্রতিটি আদরবাতাসে ক‍্যাকটাস্ ফুলের পরাগ,
নিঃশ্বাসে রক্তকার্বন প্রলেপ পড়ে
প্রসারিত গলবস্ত্রে বাতাস কুম্ভক হবে!
নাকি চিত্রকল্প কায়া, কায়াবিতান
বাতপতাকার দিশাহীন আদরচক্রে শ‍্যাওলা সাগর
মাস্তুল ডুবে যেতে চায়
ব্রেনস্টেমের ইশারা আমল দেয়নি কেউ, সাপের জিঘাংসায়…..

(৭)

যখন বাতাস হাসে,
গুহার দেওয়াল বেয়ে ওঠা সোহাগলতার আদর
বাতাস ব’য়ে নিয়ে আসে মৃগনাভীর বিকার
সাতমহলায় মহুল মেশায় রক্ত-বিম্বধর
প্রলয় নাচন মত্ত মাতন অহর্নিশ
রূদ্ধপ্রানে ধূসর অহি বিপ্রতীপ।

(৮)

খুলবে নাকি দণ্ডীপথ? খুলছে?….
ঝরছে যতো সোহাগলালা, ভুলছে বাতাসবাণী
নখের আঁচড় গুনে গুনে নামতা শিখে নিলে
সিঁড়ির হিসেব ঊর্দ্ধপানে ধায়
খুলবে? খুলছে?
লালা মেখেছে ব্রহ্ম?
সাঁতরাবে কি সৃজন খেলায় আকূল গুহার ভিতর?
হাজার কমলনেত্রে বসবে বলে
আগুন জ্বালি আবার,,, আবারও……

(৯)

আমার সন্ত্রস্ত‍্য পা
আমার অপেক্ষার ধ্রবতারা আসন
কেউ যেন কলকা চাদর পেতে দিল পালঙ্কে
কোথাও যেন রজনীগন্ধা ফুটে আছে নিভৃতে
বিগতের ক‍্যানভাসে তোমার নির্বাক মোনালিসা ছবি ভুস্ করে ভেসে উঠলো
এখানে তীব্র আঁধার
এখানে অযাচিত আদররসে শ‍্যাওলা ধরা পথ
কে দেবে আলো, কার হাতে প্রসারিত ইন্দিবর
কে লতিয়ে লতিয়ে ছুঁয়ে দেবে কথা
কারা কারা মালা হিসেবে দেবে রক্ত-রস শুষে নেওয়া করোটির ডালি
সেসব দৃষ্টি অথবা বোধ গ্রাহ‍্য নয়……

(১০)

এ লেখায় পিরামিডের গন্ধ,
এ লেখায় জেগে আছে চৌষট্টি আপেল
সব ভুলে আঁচল খুলে পেতে দিও রক্তস্রাবের ওপর
বুক খোলা থাকুক
উপত্যকায় আমার মাথাটুকু থাক হিমাঙ্কের নীচে
আঁখি জোছনায় দেখে নেবো পূর্বপুরুষের গোত্র
নাভিরজ্জুতে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে আমাকে বাতাস করে ইভ
এখন সেই ব‍্যাথাতুর সাপ আর তার দাঁতের পিছনে লুকানো গরলথলি জানে
বাতাসের ইপ্সিত ঈঙ্গিতে হামাগুড়ি দিয়ে আমার কমল আহরণ, বাকিটা আত্মমরণ নাকি আত্মরমণ
সে কৌতূহল নিছক সময়ের আক্ষেপ…..।
(শেষ)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *