ভূ-নরক কাশ্মীর কলমে – উজ্জ্বল কুমার দত্ত।

ভূ-নরক কাশ্মীর

কলমে – উজ্জ্বল কুমার দত্ত।
“””””””””””””””””””””””
কাশ্মীরে একবার পুনরায় জিহাদী আতঙ্কের ঘৃণ্য বর্বর চেহারা দেখা গেছে। আততায়ীরা (terrorist) পহলগামে নির্দোষ নিরস্ত পর্যটকদের যেভাবে আইডেন্টিফাই করে গুলি বর্ষন করেছে, তাতে বোঝা যায় যে তারা কেবল আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করে বিরত থাকতে চাইনি বরং তারা বৃহৎ সংখ্যায় মানুষের রক্তের বিনিময়ে সারা পৃথিবীর ধ্যান আকর্ষন করতে চেয়েছে। তারা খুব ভেবে চিন্তে এই সময়-ক্ষন নির্ধারণ করেছে। এই সময় আমেরিকার উপরাষ্ট্রপতি ভারত সফরে এসেছেন এবং আমাদের প্রধানমন্ত্রী সৌদি আরব সফরে গেছেন। এই বর্বরোচিত কাণ্ডকারখানা গুলি দ্বারা বোঝা যায় যে আততায়ীরা কত নিম্ন শ্রেণীর মানব মুখোশধারী শয়তান । তারা মানুষের বেশে জল্লাদ। তারা কত নিচে নামতে পারে আমরা কল্পনাও করতে পারি না। তারা বেছে-বেছে পর্যটকদেরই টার্গেট করেছে। যে পর্যটকরা কাশ্মীর অধিবাসীদের রুজি রোজগারের ব্যবস্থা করে আসছে। কাশ্মীর আস্তে আস্তে আর্থিকভাবে সক্ষম হয়ে উঠছে। পর্যটকদের জীবন কেড়ে নেবার সাথে সাথে তারা কাশ্মীরি জনগণের পেটে লাথি মারার কাজ করেছে। এই জঘন্য ঘটনার পর কাশ্মীরে পর্যটন শিল্প তলানিতে ঠেকবে। কারণ এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে কোন পর্যটক কাশ্মীরে যাওয়ার সাহস করবেন না। আততায়ীরা দেশের ক্রোধকে (outrage) বহুগুণ বৃদ্ধি করেছে। অনুচ্ছেদ ৩৭০ বিলুপ্তির পর প্রথমবার এত বড় ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয়েছে। দেশের ১৪০ কোটি লোক এ সমস্যার একটা স্থায়ী (permanent) সমাধান চাইছেন। এটাই যথাযথ অ্যাকশন নেওয়ার সময়। চুপ করে বসে থাকলে সারা বিশ্বের কাছে অন্য বার্তা যাবে। এই চুনোপুঠিদের বহূ পূর্বেই জাহান্নামের পাঠিয়ে দেওয়া উচিত ছিল। কোন সভ্য দেশ এতটা বর্বরতা সহ্য করে না। জাতির গৌরব ফিরে পেতে কখনো কখনো যুদ্ধই একমাত্র সমাধান হয়ে দাঁড়ায়। আমাদের গীতায় সেই নির্দেশিকা দেওয়া আছে।

আততায়ী এবং তাদের সমর্থকদের যোগ্য জবাব দেওয়ার সুবর্ণ সুযোগ চলে এসেছে। এতে কোন সন্দেহ নেই যে এই ঘটনা পরিষ্কারভাবে পাকিস্তানের ইশারায় হয়েছে। পাকিস্তানের সেনা অধ্যক্ষ আসিম মুনির কিছুদিন আগে জিহাদীর ন্যায় আচরণ করে হিন্দু এবং ভারতের বিরুদ্ধে ঘৃণা প্রদর্শন করেছে। তার প্রতিটি বাক্যে হিন্দু বিদ্বেষ। আমরা প্রত্যেকেই জানি যে পাকিস্তানের আইএসআই সর্বেসর্বা। মনে করা হচ্ছে যে পাকিস্তান বালুচিস্থান থেকে বিশ্বের ধ্যান হাটানোর জন্য হয়তো এই কান্ড ঘটিয়ে থাকবে। কারণ বালুচদের সঙ্গে তাদের দীর্ঘ সংঘর্ষ লেগে আছে। তারা কোনভাবেই মেনে নিতে পারছে না যে কাশ্মীরের অবস্থা দিন প্রতিদিন শান্ত হয়ে আসছে। বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মসূচি সেখানে গ্রহণ করা হয়েছে।

ভারতকে পাকিস্তানের শয়তানি মনোভাবের প্রতি অধিক সতর্ক থাকা উচিত ছিল। এই ২৮ জন হতভাগ্য জঙ্গিদের হাতে প্রাণ দিলেন তার দায় কার? পাকিস্তান কখনোই ভরসার পাত্র ছিল না থাকবেও না। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিজেদের ব্যর্থতা কেন স্বীকার করছেন না? খবরের প্রকাশ যে পর্যটকদের ধর্ম পরিচয় জেনে গুলি করা হয়েছে। সরকারের কাছে এ ধরনের হামলার কোন খবর ছিল না কেন? এই ব্যর্থতা অজিত ডোভালের এবং সবার উপর প্রধানমন্ত্রীর। তবে এরা কেউই দাই স্বীকার করবেন না এবং প্রতিবারের মতো এবারও বলে দিয়েছেন, ‘কিসিকো বকসায়েগা নেহি”। এখানেই তাদের শেষ। যারা মরল তারা মরল। গেল তাদের। আমাদের মনে রাখতে হবে ভারত ও পাকিস্তান দুই ভিন্ন রাষ্ট্র। ১৯৪৭ সালের পর দুই রাষ্ট্র দুটি পৃথক খাতে বইছে। এই দুই রাষ্ট্রের সংস্কৃতি, ভাবনাচিন্তা, অনুভূতি ও ধর্ম সম্পূর্ণ আলাদা।

(মতামত ব্যক্তিগত)

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *