চির শান্তি কলমে:—জ্যোতির্ময়

চির শান্তি
কলমে:—জ্যোতির্ময়

বল হরি হরি বোল ধ্বনিতে চারদিক মুখরিত,
আমায় নিয়ে চলেছ সু সজ্জিত শব বাহী শকটে;
ধূপের সুবাসে সুবাসিত চলার পথ,
গন্ধ টা আমার বড়োই প্রিয়,
তবুও নাকে তুলো দিয়ে ঘ্রান টা আমায় নিতে দিলে না।
আমায় নিয়ে তোমরা এসেছ শ্মশানে—
কত সুন্দর করে ঘি,সাবান মাখিয়ে
স্নান করালে আমায়,
জানো,, আমার মা ও কোনোদিন এমন সুন্দর করে স্নান করায় নি।
নতুন বস্ত্রে আমায় কি সুন্দর লাগছে দেখো! এতো আমার পরম পাওয়া ।
তোমরা আমার জন্য এত্তো ভাবো?
অসাধারণ!আমার শয়ন চিতা টা সাজিয়েছো,
বাক্ শক্তি থাকলে কৃতজ্ঞতা জানাতাম।

চিতার লক্ লকে লেলিহান শিখায়
দেখো, কি আরামে শুয়ে আছি,
যে নতুন বসন পরালে আমায়;
তার সাথে দেহের চামড়া গুলো
দেখো দেখো ওই সূতো কাটা ঘুড়ির মতো উড়তে উড়তে
দূ—-রে মিলিয়ে যাচ্ছে ।
পোড়া মাংস আর রক্ত রস কত সুন্দর
ফেটে ফেটে যাচ্ছে দেখো,
কত সুন্দর লাগছে আমায়,
তুমি ঠিক যেমন টা দেখতে চেয়েছিলে।
তোমার আশা পূরণে আজ
ভীষন খুশী আমি।

জানো, চিতার আগুনে আমার হাত,পা
শিরার টানে সোজা হলে;
পরম মমতায় বাঁশের বাড়ি দিয়ে
নামিয়ে দিচ্ছে,
ধোঁয়ায় পাকানো কুন্ডলী হয়ে
কত সুন্দর উপরে উঠে যাচ্ছি,
ভীষণ মজা পাচ্ছি ।

ধীরে ধীরে স–ব শেষ,
রক্ত মাংস শিরা উপশিরা
পরিণত অস্থিতে বেশ!
যেন দলা পাকানো লাভা,
লালিমা সূর্যের আভা।
দোহাই, এ অস্থি ভাসিও না গঙ্গায়,
তোমার দু’ফোঁটা চোখের জলে
ভিজিয়ে দিও এ অস্থি,
চির শান্তি পাবো ।
চির শান্তি পাবো ।।

“” যদা শৃতং কৃণব জাতবেদঃ
অথেমেনং প্রহিণুতাৎ পিতৃভ্যঃ””

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *