শিশুশ্রমিক ….সুব্রত…..

ক্যালেন্ডারের পাতা বলছে আজ “শিশুদিবস”। এই গালভরা কথাটার মানে সত্যিই বুঝতে পারিনা, যখন দেখি পথেঘাটে হাজার হাজার শিশু না খেতে পেয়ে ধুঁকছে, দুমুঠো ভাতের জন্য শ্রমিকের কাজ করছে, বা স্কুলে হয়ত যাচ্ছে কিন্তু তা লেখাপাড়া করার জন্য নয় পেটভরে ‘মিডডে মিল’ নামক সরকারি প্রসাদ খিচুড়ি খেতে। সেই সমস্ত পথের ধুলায় বেড়ে ওঠা শিশুদের নিয়ে লেখা আমার একটা খুব প্রিয় পুরোন কবিতা ডায়েরির পাতা থেকে বন্ধুদের আবার পড়ার জন্য পাঠালাম, এই আশা নিয়ে যদি তা ঐ শিশুদের জীবনে কোন পরিবর্তন আনতে পারে …..

শিশুশ্রমিক

….সুব্রত…..

টেবিল থেকে টেবিলে ছুটছে ছেলেটা ,
তিন কাপ চা আর অমলেট দুই হাতে ।
বয়স হবে সাত আট কিবা দশ ।
পেট ভরে খেতে পায়নি কালকে রাতে।

ইঁটের পাঁজা মাথায় ছেলেটা উঠছে ,
বাঁশের সিঁড়িতে এক পা এক পা করে ।
হাতে নেই তার পেন বই পেনসিল ,
শ্রমিক সে আজ, শৈশব গেছে ঝরে।

জীর্ণ শীর্ণ ক্ষুধায় কাতর চেহারা ।
পরিধেয় তার হাজার তালিতে ভরা ।
হাতে ডিমটোস্ট, পারেনা কামড় দিতে ,
ভয়ে জড়সড় একটা ভীতুর বাড়া ।

জানেনা তার বাপ মা ও ঠিক দিনটা ,
ছেলেটা তাদের জন্মেছিল টা কবে ।
কোদাল তুলেছে তুলতুলে দুটি হাতে,
ঠিকঠাক করে দাঁড়াতে শিখেছে যবে।

শিশু বলে তার আধা মজুরিই প্রাপ্য ।
যদিও শ্রম দিতে হবে তাকে পুরোটা ।
ফাঁকি মারলেই খেতে হবে চড়থাপ্পর ।
চুরি করে খেলে, বদনাম হবে “চোরটা” ।

রোজের এ ছবি পথেঘাটে ছড়াছড়ি ।
‘শিশুশ্রমিক’ এই শব্দটা বড় তিতো ।
বাস্তব, আজ চাবুকের বাড়ি মারে ,
শ্রমিকের ভীড়ে শিশুর সংখ্যা কত?

পরিসংখ্যানে আসবে যাবে না কিছু ।
কত সেমিনার কত আলোচনা হবে ?
বেকার সে সব গাল ভরা জল্পনা,
ভাব বিনাশ্রমে শিশুটি কাল কি খাবে ।।

ভাব কি দোষে শিশুটি পায়না খাদ্য ।
কেন পায়না সে হাতে বই পেনসিল ।।
পড়তে নয়, সে আসে প্রতিদিন স্কুলে,
খেতে পেট ভরে খিচুড়ি “মিড-ডে মিল” ।

শিশুদিবসেই আসুন শপথ নি
এমন জগৎ দেব শিশুটিকে তুলে ।।
যেখানে সে বাড়বে শিশুরই মতন ,
দেখতে পারবে জগৎটা চোখ খুলে ।

….সুব্রত…..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *