জবাকুসুম___ কলমে_ অগ্নিমিতা দাস

জবাকুসুম___________
কলমে_ অগ্নিমিতা দাস

কাল থেকেই আকাশ ঘষা স্লেটের মতো ধূসর ছিল। মাঝে মাঝে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি পড়ছিলো। বাতাসে একটা আঁশটে গন্ধ বুড়ি পাচ্ছিল। ও মাঝে মাঝে এইরকম অদ্ভুত অদ্ভুত গন্ধ পায়। মিষ্টি ফুলের গন্ধ, টকে যাওয়া পান্তাভাতের গন্ধ, করমচার গন্ধ। কেও বিশ্বাস করে না, বুড়ি কাউকে বলে ও না। শুধু ভোলু জানে ওর এই অদ্ভুত গন্ধ পাওয়ার কথা। আজ যখন দুপুরে বাসন মেজে দাওয়ায় উপুড় করে রেখে দেখে তার নতুনমা রূপসী গুড়াকু মাজতে মাজতে বাইরের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছে, তখন বুড়ি একটা কড়াইতে শুকনো লংকা ভাজার গন্ধ পায়। তক্ষুনি সে বুঝতে পারে সে এখন এখান থেকে চলে গেলে রূপসী খুব খুশি হবে। বুড়ি দাওয়ায় টাঙ্গানো ঝাপসা হয়ে যাওয়া আয়নার সামনে আটকানো তাকে হাতড়ে হাতড়ে একটা সেফটিপিন পেলো, সেটা ছেঁড়া ফ্রকের পিঠে হাত ঘুরিয়ে কোনমতে এঁটে দরজা দিয়ে বেরিয়ে গেলো। রূপসী কিছু জিজ্ঞেস করলো না, অন্য সময় হলে স‌ওয়াল জবাবের বন্যা বয়ে যেতো। উঠোনে বসা ভোলু ওকে দেখে লেজ নাড়িয়ে পিছু নিলো। এইসময় বুড়ি নদীর পারে গিয়ে বসে। পথে দেখা হলো বাইকে চাপা বাবরি চুল আর চোস্ত প্যান্টুলুন পরা লোকটার সাথে। এই লোকটা এখন ওদের ঘরে যাবে। বুড়ির মায়ের ঘরে দোর পড়বে দুঘন্টার জন্য।

বুড়ি সব বোঝে। জীবন ওকে অনেক কিছুই বুঝিয়ে দিয়েছে এই চৌদ্দ বছর বয়সে। বুড়ির বাবা জেলে, নৌকা নিয়ে মাছ ধরতে যায় মাঝগঙ্গায়। দুই তিনদিন হয়তো ঘরে থাকে না। বুড়ির যখন আট বছর বয়স তখন তার মা মারা যায়। বুড়ির একটা ভাই হতে গিয়ে আঁতুড়ঘরেই মা আর ছেলে দুজনেই শেষ হয়ে যায়।বুড়ির ভালো নাম বাসন্তী। কিন্তু কেও ওকে ওই নামে ডাকে না। মা ছোটবেলায় আদর করে নাম রেখেছিল বুড়িমা। সেই থেকে মা উঠে গিয়ে বুড়ি হয়ে গেছে। মায়ের কথা মনে পড়লেই জবাকুসুম তেলের আর ফুটন্ত ভাতের গন্ধ পায়। মা স্নান সেরে দাওয়ার একধারে উনুন ধরিয়ে যখন ভাত বসাতো। বুড়ি তখন মায়ের গা লাগিয়ে বসে থাকতো। মায়ের মাথা থেকে তেলের গন্ধ, আর উনোনে ফোটা ভাতের গন্ধ মিলেমিশে এক হয়ে যেত। মা শিলে ছোলা বেটে তাতে নুন লংকা দিয়ে মেখে যত্ন করে বুড়িকে ভাত খেতে দিতো। বাবা যখন মাছ নিয়ে আসতো, সেই জ্যান্ত মাছের বেগুন বড়ি দিয়ে ঝোল যখন রাঁধতো, তখন গন্ধে পাড়া মৌ মৌ করতো। মা যখন উঠোনে তুলসীতলায় প্রদীপ জ্বালিয়ে শাঁখ বাজাতো, তখন ভোলুর তালে তাল দিয়ে মুখ দিয়ে শাঁখ বাজানোর কি ধুম! তারপর জমাট আঁধারের মধ্যে লন্ঠন জ্বালিয়ে তালাই পেতে মা ওকে নিয়ে পড়াতে বসতো। বুড়ি উশখুশ করতো, কখন ছুটি হবে আর মায়ের মুখে ভূতের আর রাজপুত্তুরের গপ্পো শুনবে। রাতে বিছানায় শুয়ে ঝিঁঝিঁ পোকার শব্দ আর মায়ের কোল ঘেঁষে শুয়ে গপ্পো শুনতে শুনতে বুড়ি ঘুমের রাজ্যে চলে যেতো। এখন তো তাদের বাড়িতে কারেন্ট চলে এসেছে, রঙিন টিভি এসেছে। মা মরার তিনমাসের মধ্যে ওর বাপটা একটা রোগা হিলহিলে মেয়েকে বিয়ে করলো। বুড়ির সাথে পরিচয় করিয়ে বলল __ বুঝলি বুড়ি, এটা তোর নতুনমা। তোকে এখন থেকে এই মা দেখবে। রোগা পটকা সালোয়ার কামিজ পরা এই মেয়েটাকে ওর একটু ও মা বলে মনে হয় না। তবে এই মা ওর সাথে খারাপ ব্যবহার করে না। বরং মাঝে মাঝে ওর বন্ধু কার্তিকের পাশের গন্জ থেকে আনা চকোলেট চিপস খেতে দেয়। হেয়ার ব্যান্ড এটাসেটা এনে দেয়। একটু কাজ করায়, কিন্তু মন্দ নয়। ওর বাপ যে পয়সার লোভে বিয়ে করেছে, বুড়ি বুঝতে পারে।
রূপসীর রূপের সেইরকম কিছু বালাই নেই, কিন্তু টিভির মেয়েদের মতো খুব স্টাইলো আছে। পাশের গন্জে ওর বাপের মশলার দোকান। পণে বাপ টিভি, পাখা, খাট সব পেয়েছে। বুড়ির মা কত সুন্দর করে রান্না করে ভাঙ্গা ঘর নিকিয়ে তাতে মাঝে মাঝে রঙ দিয়ে ফুল এঁকে সাজাতো। সেলাই করতো। বাপটা তাতে ও মদ খেয়ে এসে রাতবিরেতে মাকে বেদম পেটাতো। এই রূপসী তো ঘরের দিকে তাকিয়ে ও দেখে না। খালি টিভির সিরিয়াল গেলে আর মোবাইল দেখে। গতবছর ঝড়ের পর নতুমার বাপের টাকায় ভাঙ্গা টালি সরিয়ে অ্যসবেস্টটার লাগানো হয়েছে। দাওয়াটা পাকা করা হয়েছে। বুড়ির একটা খুপরি ঘর ও হয়েছে। কিন্তু চারদিক কেমন উলোঝুলো। বুড়ি রান্না করে, বাসন মাজে ঘর গোছায়। ঘরের দেওয়ালে টাঙানো মায়ের হাতে সেলাই করা ” সংসার সুখের হয় রমনীর গুনে” বাঁধানো ফটোটা মাঝে মাঝে নামিয়ে ঝাড়ে। বুড়ির বাপ এখন মদ খেয়ে এসে ও নতুনমাকে ঘাঁটায় না। চুপচাপ শুয়ে পড়ে। কিন্তু বুড়ি জানে রূপসী ওর বাপের বাড়ির পাড়ার কার্তিকের সাথে পেয়ার মোহাব্বত করে। একদিন ও শুনতে পেয়েছিল কার্তিক বলছিলো_ আমি বাউরি বলে তোর বাপ আমাদের বিয়ে দিলো না। তাড়াতাড়ি করে আধদামড়া একটা দোজবরের সাথে বিয়ে দিয়ে দিলে। কি না পাল্টি ঘর। নুন আনতে পান্তা ফুরোচ্ছে এই সংসারে তুমি পড়ে আছো কি করে। ওই মাছ ধরে ক পয়সা রোজগার হয়। আমার সাথে পালিয়ে চলো। রাজরানী করে রাখবো। আমার মোবাইল রিপেয়ারিংর দোকানটা বেশ জমেছে।
_ আঃ! কেতো। বড় কথা বলো। পালিয়ে যাবো বলেই তো হবে না, একটু গুছিয়ে বাগিয়ে নিয়ে পালাবো। সামনের মাসে একটা বিছে হার দেবে বলেছে। বাপের কাছে ও কিছু গুছিয়ে নিতে হবে। এসো তো একটু আদর করো দেখিনি। ওই বুড়ো তো আমার শরীরের জোয়ার‌ই সামলাতে পারে না। বলেই খিলখিল করে হাসির আওয়াজ শোনা যায় বন্ধ দরজার ওপাশে।
নদীর জলটা কেমন ঘোলাটে লাগছে। দূর থেকে মাইকে ভেসে আসছে ঘোষণা_ আগামী চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে আসছে ইয়াস ঝড়। আপনারা প্রশাসনের সাথে সহযোগিতা করুন। নিজ নিজ গবাদিপশু নিয়ে নামখানার দু নম্বর ব্লকের স্কুল বাড়িতে আগামীকাল চলে যেতে বলা হচ্ছে।
গতবছর আমফানের সময় ওদের আদরের বুধি গাইটা জলে ভেসে গিয়েছিল। মায়ের কেনা ছিলো। তারপর বাপ বাকি গরুবাছুরগুলো ও সব বিক্রি করে দিয়েছে । এখন শুধু উঠোনের একপাশে রাখা দরমায় অল্পকটা হাঁস মুরগি আছে। বুড়ির বাপরা আজ কেউ মাছ ধরতে যায় নি, ওর বাপ গেছে পাশের গ্রামে জাল সারাতে আর সুদের টাকা দিতে। এখন মুড়িগঙ্গার জল পোয়াতি মেয়ের লাবন্যে টলটল করছে। বৃষ্টি না হলে অন্ধকার পাতলা সরের মতো পৃথিবীময় জুড়ে থাকে। পৃথিবীর বুকের ভিতর থেকে উঠে আসা নিঃশ্বাসের মতো একরাশ ঠান্ডা বাতাস নদীর জলে খেলা করতে করতে বুড়ি আর ভোলুদের ছুঁয়ে ছুঁয়ে যায়। নদীর বুকে অদ্ভুত এক অন্ধকার লুকোচুরি খেলা করে জলের সঙ্গে। বুড়ি বাড়ি ফিরে এসে দেখে বাপটা মুড়ি চপ খাচ্ছে। চপ কিনে এনেছে। রূপসী ওর দিকে তাকিয়ে বলল_ সন্ধ্যাবেলায় এলোচুলে ঘুরতে নেই। আয় চুল বেঁধে দি‌ই।এ তো ভূতের মুখে রাম নাম। কোনোদিন বুড়ির চুলে চিরুনি পর্যন্ত যে দেয় নি সে হঠাৎ চুল বেঁধে দেবে। কাল থেকে এখানে কারেন্ট নেই। এখানে কারেন্ট থাকলে ও প্রায় লো ভোল্টেজ। বুড়ি কথা না বাড়িয়ে লন্ঠন জ্বালিয়ে চিরুনি তেল নিয়ে রূপসীর কাছে গুটিগুটি পায়ে হাজির হলো। আকাশের এই ঘোলাটেপানার জন্য বিকেল থেকেই অন্ধকার লাগছে। রূপসী বুড়ির চুলের জট ছাড়াতে ছাড়াতে বলল__ শুনছো তো মাইকে কি বলে বলে বেড়াচ্ছে। কাল চলো আমরা সব গুছিয়ে গাছিয়ে স্কুল বাড়িতে চলে যাবো। দেখবে এবারে আগেরবারের থেকে ও অবস্থা খারাপ হবে।
বাপ মুখ ভেটকে বলল__ রাখো তোমার টিভির খবর। দাশু জগাদের সাথে শলাপরামর্শ করে এলাম, কেও যাবে না। নিজের ভিটে ছেড়ে কেও যায়? তাছাড়া ওই এক স্কুলবাড়িতে গাদাগাদি করে থাকবো আর ওই করোনা হোক।
রূপসী মুখ ঝামটা দিয়ে বলল_ সে হতে আর বাকি রয়েছে নাকি?আমি কাল দুপুরেই সব নিয়ে চলে যাবো। তুমি পড়ে থাকো তোমার ভিটেমাটি নিয়ে।

বুড়ি তোইতোই করতে করতে হাঁস মুরগিগুলোকে দরমায় ঢোকাচ্ছিল। ঘরের ভেতর থেকে ভেসে আসছিল ওদের ঝগড়া। ওর বাপের গত মাসে করোনা হয়েছিল। সদর হাসপাতালে ভর্তি ছিল । তখন কার্তিক ওদের বাজার হাট সব করে দিতো। বুড়ি বুঝতে পারছিলো কাল ওর নতুমা কার্তিককে নিয়ে পালাবে। ওর বাপ দিন পনেরো আগে বিছেহার দিয়েছে, জন্মদিনে। বুড়ির মন বলছিলো আজকেই ওদের প্ল্যান হয়েছে, এই ঝড় ওদের পালানোর মদত করে দিলো।

বুড়ি আজ খুব ভোরে উঠেছে।আকাশে অন্ধকার যেন হুস করে উঠে গিয়ে গাছের মাথায় জমে। আকাশের সোনার টিপটা থেকে যখন ঝলক ঝলক আগুন বেরোতে থাকে তখন বুড়ি দেখে বাপেদের ঘরের দোল খোলা। রূপসী দুটো বড়ো তরঙ্গে সব জামাকাপড়, পয়সাকড়ি, ওর বাপের দেওয়া গয়না,যাবতীয় কাগজপত্র সব গুছিয়ে নিচ্ছে। ওর বাপ লুঙ্গির খুঁটে মুখ মুছতে মুছতে বলছে_ দেখছো তো কেমন রোদ উঠেছে। তবু ও লোকে ক্ষ্যাপাচ্ছে আর তোমরা ক্ষেপছো। আমার কাগজপত্রগুলো সব নিয়ে যাও। শোনো তোমায় একা একা ওখানে আমি ছাড়বুনি। দাশুর বোন যাবে বলছিলো ওর সাথে যাবে। রূপসী তেড়েমেড়ে বলে উঠলো আমার জেঠীমারা সবাই যাবে। বিশ্বাস না হয় বাবার সাথে কথা বলে নাও। বুড়ির বাপ হাল ছেড়ে দিয়ে বৌকে সাথে নিয়ে স্কুলবাড়ির দিকে পা বাড়ালো।

বুড়ি ভালোই জানে বাপ ফিরে এলেই ওরা ওখান থেকে পালাবে। বিকেলের মধ্যেই মোটামুটি ভাবে গ্রাম ফাঁকা। সন্ধ্যা থেকে শুরু হলো অঝোর বৃষ্টি। বাপ মেয়ে সকালের রান্না করা ভাত আর আলুর তরকারি খেয়ে শুয়ে পড়লো।
বৃষ্টির শব্দে কখন চোখ লেগেছে জানে না বাইরে চিৎকার চেঁচামেচিতে বুড়ির ঘুম ভেঙ্গে গেল ।
বাইরে অন্ধকারে কিছু দেখা যাচ্ছিল না। হঠাৎ সমস্ত পৃথিবী ধাঁধিয়ে দিয়ে বিদ্যুৎ চমকে উঠতেই ওরা দেখলো ঘোলাজলের স্রোত উঠোনময় কিলবিল করছে। যারা থেকে গিয়েছিল টর্চ হাতে ডাকাডাকির আওয়াজ। ওর বাপের জলের মধ্যে চলতে কষ্ট হচ্ছে। ছোট ঘরে তখন পায়ের পাতার ওপর জল। কি নেওয়া যায় না যায় ভাবতে ভাবতেই বুড়ি টিভির টেবিলের ওপর টর্চটা খুঁজে পেল।দ্রুত জল বাড়ছে। খাটের অনেকটা জলের তলায়। মেঝেতে রাখা বড়ো তোরঙ্গটা নিয়ে বেরিয়ে পড়লো বাপ মেয়েতে। ওতে ভরা আছে মাছ ধরার জাল আর দরকারি জিনিসপত্র। বাইরে বেরিয়ে বুঝলো ভোর রাত। বেশিরভাগ লোক‌ই চলে গেছে। তাদের মধ্যে গুটিকজন জল ঠেলে ঠেলে এগোতে লাগলো। ভোলু ঠিক ওদের সঙ্গ নিয়েছে। বুড়ির তখন ও ঘুমের ঘোর কাটেনি, তীব্র হাওয়া সবাইকে যেন ছুরির আঘাতে ফালা ফালা করে দিচ্ছে। কিছুটা এগোতেই বুড়ি ওর বাবার দিকে তাকিয়ে বলল__ ও বাপ! তুই এগো জগাকাকার সাথে। আমি একবার ঘরে যাবো ।
ওর বাপ কি একটা বলতে চাইলো, কথা শোনা যাচ্ছে না, বৃষ্টির শব্দে। বুড়ি বাপের হাত ছাড়িয়ে টর্চটা নিয়ে পেছন দিকে ছুটলো। হাজার হাজার আলপিনের মতো বৃষ্টি ওকে বিঁধছিলো। বুড়ি ঘরের দিকে এগোলো। পেছনে পেছনে ছপছপ আওয়াজ, ভোলু ঠিক আসছে।কোমরজল ভেঙে ওর ঘরের মধ্যে ঢুকে বুড়ি হাঁফাতে লাগলো। জলের মধ্যে কিছু স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে না। বুড়ি হাতড়ে হাতড়ে তক্তার ওপরে রাখা বালিশের নীচে হাত ঢোকালো। জল তখন তক্তাপোষ ছুঁয়েছে। পেয়ে গেছে, এইতো তুলোট কাগজে মোড়া আলতা মাখানো পায়ের ছাপ। মা মারা যাবার পর পাড়ার এয়োরা আলতা পরিয়ে সেই ছাপটা কাগজে রেখেছিল। এত বছর ধরে বুড়ি এই কাগজখানা বালিশের নীচে নিয়ে থাকে।

গতবছর ঝড়ে ও বুকের মধ্যে নিয়ে রেখেছিল কাগজটা। কেও টের পাই নি।পরম স্বস্তি নিয়ে বুড়ি টর্চ হাতে দরজার দিকে এগোলো। কিন্তু জল এখন তার মাথা ছুঁই ছুঁই। আচমকা টর্চটা হাত থেকে পড়ে গেল।ঠান্ডা জলের স্রোত ওকে নীচের দিকে তলিয়ে দিচ্ছে। বুড়ি জলে ভাসতে ভাসতে খুব কাছ থেকে চেনা একটা গন্ধ পেলো _ জবাকুসুম।
অদ্ভুত সারল্য নিয়ে জলেরা বয়ে যায়। দু একটা তারারা যাওয়ার আগে যেন কেউ তাদের কথা দিয়ে নিয়ে যাচ্ছে এমন মুখ করে মুখ লুকোয় আকাশের বুকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *