বালুরঘাট পৌরসভার হাজিরা থেকে সাফাই কাজ, সবেতেই গলদ, ক্ষোভ প্রকাশ শঙ্কর চক্রবর্তীর

২১শে সেপ্টেম্বর, বালুরঘাটঃ বালুরঘাট শহরের সাফাই কাজ কিম্বা অফিসের কর্মীদের হাজিরা আবার কোথাও নির্মাণ কাজে নিয়ম না মানা, এই সব কিছুই যেন বালুরঘাট বাসির কাছে পৌরসভার প্রতি ছিলো নিত্য দিনের সঙ্গী। কিন্তু কাগজে কলমে বালুরঘাট পৌরসভার কর্মীরা সব কিছুতেই যেন ছিলো একজন বাধ্য কর্মীর পরিচয়, বাস্তবে যে চলছিলো একটা মৎসান্যায়। আর এইসব কিছুতেই এবার যেন বর্জ্রপাত ঘটালেন স্বয়ং শঙ্কর। বালুরঘাট পৌর প্রশাসক সদস্য পদে বসেই আর কিছুতেই যেন তিনি রেয়াৎ করছেন না, রাস্তার নির্মাণ কিম্বা রাস্তার ড্রেনের কাজের মান নিয়ে তদারকি এই সব কিছুর নমুনা দেখা গেছে কিছু দিন আগেই, এবার তিনি হাত দিলেন পৌ্র কর্মীদের হাজিরা থেকে শহরের ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে সাফাই অভিযানে। অভিযোগ তিনি আগেই পেয়েছিলেন, এবার সরজমিনে তিনি পৌরসভার আধিকারিকদের নিয়ে পৌছে গেলেন এলাকা এলাকায়। আর উঠে এলো নির্মল বাংলার করুণ দৃশ্য।

সকাল ঠিক সারে দশটায় শঙ্কর চক্রবর্তী বাড়ি থেকে বেড়িয়ে বালুরঘাট পৌরসভায় পৌছেই প্রবেশ করলেন হাজিরা রেজিস্ট্রেশন রুমে, যেখান বেলা ১০টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত অনুপস্থিত পুরকর্মীরা। যা নিয়ে অফিসেই ক্ষোভ উগরে দেন তিনি। সেইখান থেকে পৌর আধিকারিকদের নিয়ে বেড়িয়ে পরেন এলাকা এলাকার সাফাই কাজ পরিদর্শনে। হাতে ছিলো রিতিমতো অভিযোগের তালিকা, ১৪ নম্বর ওয়ার্ড থেকে শুরু করেন তার এইদিনের সাফাই পরিদর্শনের কাজ। এই ওয়ার্ডে গিয়ে দেখতে পেলেন সাফাই পরিদর্শনে পুরনিযুক্ত অধীক্ষক দাঁড়িয়ে রয়েছেন সাফাই গাড়ির অপেক্ষায় বেলা প্রায় ১১টা তেও রাস্তার পাশে জমে রয়েছে ধিকি ধিকি আবর্জনার স্তূপ। এরপরে একে একে ঝোলা থেকে বেড়িয়ে এলো বেড়াল, ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের আর এক প্রান্তে কয়েকদিন থেকে জমে থাকা আবর্জনা সাফাই হয়নি বিগত কয়েকদিন ধরে। ১৪ এর পরে ১৩ পুর বাসস্ট্যান্ডের পেছনের রাস্তায় চলাফেরা করাই হয়ে উঠেছে দুরদায়, পরিস্কার না হওয়া রাস্তার পাশের আবর্জনা এতোটাই ভরে গিয়েছে, যা পৌছে গিয়েছে রাস্তার উপরে।

পথ চলতি মানুষজনদের রাস্তা দিয়ে চলা চল কিম্বা রাস্তার পাশের বাড়ি গুলোতে বসবাস করাই হয়ে উঠেছে দুর্গন্ধে নাভিশ্বাস অবস্থা। ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের পরে ১৫, ১৬ একি পরিস্থিতি। অগ্নীশিখা ক্লাবের পাড়া থেকে বেরিয়ে তিনি ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে প্রবেশ করলেন বঙ্গী স্কুলের পেছন পাড়া দিয়ে। সেইখান থেকে বঙ্গী হয়ে ১৭ ও ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের সীমান্ত রাস্তা দিয়ে প্রাচ্যভারতীর দিকে এগোতেই গাড়ি থেকে নেমে রীতি মতো ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। রাস্তার ধারে এইভাবে দিনের পর দিন আবর্জনার স্তূপ পরে থাকলেও পরিস্কার করতে নজরে আছেনা পুরসভার সাফাই গাড়ির। এলাকার বাসিন্দারা অভিযোগ করেন চার পাঁচদিন পরে পরে একবার করে এসে আবর্জনা সাফাই করে পুরসভার গাড়ি যা শুনে রীতি মতো আতকে ওঠেন পুরসভার নির্বাহী আধিকারিক অতনু মন্ডল। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন এক একটা ট্রাক্টর ভাড়া নেওয়া হয়েছে, সাফাই কাজে প্রতিদিন কম করেও চার চার বার করে আবর্জনা নেবার জন্য, এতো গুলো গাড়ি, সাফাই কর্মী, অধীক্ষক নিযুক্ত থাকলেও শহরের একি হাল। সাফাই কাজে দেখা নেই একজন কর্মীকেও। আর এই সব দেখে রীতি মতো ক্ষোভ উগরে দিলেন পৌর প্রশাসক সদস্য শঙ্কর চক্রবর্তী।

তিনি আমাদের বলেন তিনি এলাকার মানুষদের কাছ থেকে যে যে অভিযোগ পেয়েছেন তা রীতিমতো বাস্তব। কর্মীদের হাজিরা থেকে সাফাই কর্মীদের ফাঁকিবাজি এতো টাই যে ১৩ থেকে ২১ নম্বর ওয়ার্ড সব ওয়ার্ড ঘুরে রীতি মতো নারকীয় অবস্থা তৈ্রি হয়েছে শহরে। যা মেনে নেওয়া যাবে না, কেন এই অবস্থা হয়েছে তা নিয়ে এই কাজে যুক্ত সবাইকে ডেকে জবাব চাওয়া যেমন হবে, তেমন রীতিমতো ব্যাবস্থা গ্রহন করবে পুরসভা। শহরকে ও শহর বাসিকে পুর পরিষেবা দিতে বদ্ধ পরিকর বালুরঘাট পুরসভা, তিনি কিছু দিন হলে এই দায়িত্বে এসেছেন, এসেই একে একে রাস্তা, ড্রেন নির্মাণ থেকে এইদিন সাফাই কাজ সব কিছু সরজমিনে তদন্ত ও পরিদর্শন করে তিনি স্তম্ভিত। এমন ব্যাবস্থা মেনে নেওয়া যাবেনা, উপযুক্ত ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে। তিনি বলেন শহর বাসির পরিষেবা নিয়ে তিনি প্রতিদিন এই ভাবে আচমকা পরিদর্শন করবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *