জেলার রেল নিয়ে বঞ্চনায় সরব হয়ে আন্দোলনে দক্ষিন দিনাজপুর নাগরিক কমিটি, পাশে সব রাজনৈতিক দল

২০শে সেপ্টেম্বর, বালুরঘাটঃ দক্ষিন দিনাজপুর জেলার রেল নিয়ে শুরু থেকেই বার বার বঞ্চনার শিকার হয়েছে এই জেলার মানুষ, ১৯৮৪ সালে একলাখি বালুরঘাট রেল প্রকল্প অনুমোদন পেলেও এই জেলায় এই প্রকল্পের বাস্তবায়ন হয়েছে ২০০৪ সালে, তাও ছিলো একপ্রকার অর্ধসমাপ্ত। আর যা নিয়ে এই জেলার মানুষকে বার বার পথে নেমে আন্দোলন করেই জেলার রেল প্রকল্প গুলোকে পরিনত করতে হয়েছে। কিন্তু এই সব কিছুর মাঝেও এই জেলার রেল প্রকল্পের বাস্তবায়নের ১৫ বছর পরেও জেলাবাসি পূর্ণ রেল পরিষেবা পাইনি। অথচ সীমান্তবর্তী এই জেলার রেল ব্যাবস্থা বা যোগাযোগ ব্যাবস্থার উন্নয়ন নিয়ে কোন প্রকার হেলদোল দেখা যায়নি কেন্দ্রীয় সরকারের মধ্যে। ২০০৪ সালে একটি মাত্র ট্রেন দিয়ে যোগাযোগ ব্যাবস্থা গড়ে উঠলেও জেলার বাসির দাবী মেনে তৎকালীন রেলমন্ত্রী লালু প্রসাদ যাদব গৌড় এক্সপ্রেসকে বালুরঘাট পর্যন্ত সম্প্রসারন করলেও একপ্রকার মালদা জেলার আন্দোলনের কাছে নতি স্বীকার করে, রেল তা দক্ষিন দিনাজপুর জেলা বাসির জন্য এর বাস্তবায়ন করতে পারেনি।

যার বদলে এই জেলার বাসির কপালে জুটে ছিলো গৌড় লিঙ্ক এক্সপ্রেস ও সপ্তাহে তিনদিন তেভাগা এক্সপ্রেস, যা পরবর্তীতে মমতা ব্যানার্জী রেলমন্ত্রী থাকাকালিন সপ্তাহে ছয় দিন হয়। এরপরে ইউপিএ ২ সরকারের আমলে হাওড়া বালুরঘাট দ্বি-সাপ্তাহিক একটি এক্সপ্রেস ট্রেন চালু হয়। মোদী সরকার দেশে ক্ষমতায় এলে জেলা বাসি দাবী করে হাওড়া বালুরঘাট দ্বি-সাপ্তাহিক এক্সপ্রেস ট্রেনকে সপ্তাহে সাতদিন চালু করবার, যার পরেও কেটে গেছে মোদী সরকারের পাঁচটি বছর, আবার পাঁচ বছরের জন্য নিরঙ্কুশ ক্ষমতা নিয়ে এসেছে মোদী সরকার, যেখানে এই জেলা থেকেও একজন সাংসদ পেয়েছে বিজেপি, সেইখানে এই জেলার প্রাপ্তির বদলে জেলাবাসি আবার পেতে চলেছে বঞ্চনা। যার প্রতিবাদে সরব হয়েছে এই জেলার মানুষ, একটা নাগরিক মঞ্চ করে জেলা বাসি আন্দোলনে নামার ডাক দিয়েছে এই বঞ্চনার বিরুদ্ধে, যেখানে এই আন্দোলনকে সমর্থন করে পাশে থাকছে জেলার সব রাজনৈতিক দল।

জেলা তৃণমূল সভাপতি অর্পিতা ঘোষ আমাদের বলেন তিনি যখন এই জেলার সাংসদ ছিলেন তখন তেভাগা এক্সপ্রেসের সঙ্গে রায়গঞ্জ লিঙ্ক কোচ জুড়ে দিয়ে এই ট্রেন পরিষেবাকে নষ্ট করবার প্রচেষ্টা করেছিলো রেল, যা তিনি প্রতিবাদ করে বন্ধ করে দিয়েছিলেন। কিন্তু আবার সেই তেভাগা এক্সপ্রেকে নিয়ে ছেলে খেলা করছে রেল। বর্তমানে তিনি আর সাংসদ নেই, তাই এই সমস্যাকে সমাধান করতে ময়দানে নাতে বর্তমান সাংসদকে অনুরোধ করেন। এবং জেলা নাগরিক আন্দোলনে তিনি ও তৃণমূল কংগ্রেস পাশে থাকার আশ্বাসও দেন।

পাশাপাশি তেভাগা এক্সপ্রেসের এহেন পরিস্থিতি নিয়ে তীব্র প্রতিবাদ করেন বালুরঘাটের বিধায়ক ও আর এস পি রাজ্য সম্পাদক বিশ্বনাথ চৌধু্রী। তিনি বলেন এই ধরনে অন্যায় মেনে নেওয়া যাবেনা। তাদের ও জেলা বাসির আন্দোলনের ফলে তৎকালিন বালুরঘাটের আর এস পি সাংসদ রনেন বর্মণের হাত ধরে, ও তৎকালিন রেলওয়ে স্টান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান বাসুদেব আচারিয়া ও সদস্য অবনী রায়ের প্রচেষ্টায় এই জেলা তেভাগা এক্সপ্রেস পেয়েছিলেন। যাকে নিয়ে ছেলে খেলা করলে তা মেনে নেওয়া যাবেনা। তিনিও জেলার নাগরিক আন্দোলনের পাশে থেকে এর প্রতিবাদ করবেন বলে জানান।

এই বিষয়ে বর্তমান সাংসদ সুকান্ত মজুমদার আমাদের জানান এই ধরনের একটা সময় সূচী তেভাগার নামে ভুল করে রেল করেছে। তিনি পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলেছেন, এই বিষয়ে এই জেলার কোন ট্রেন এই মুহুর্তে বাতিল হচ্ছে না। তিনি হাওড়া বালুরঘাট এক্সপ্রেসকে প্রতিদিনের দাবী করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *