কেশপুরের পর মেদিনীপুর, এ বার ভারতীর কনভয় রুখল পুলিশ

১২ই মে, দিনাজপুর ডেইলি ডেস্কঃ

দিনভর তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের বিক্ষোভ ইটবৃষ্টিতে বার বার কেশপুরের বিভিন্ন জায়গায় আটকা পড়েছিলেন ঘাটালের বিজেপি প্রার্থী ভারতী ঘোষ। দিনের শেষে, তৃণমূল নয়, তাঁকে রাস্তায় আটকে দিল রাজ্য পুলিশ।

বেলা পৌনে তিনটে নাগাদ রণক্ষেত্র কেশপুর থেকে পুলিশি ঘেরাটোপে কেশপুর থানা ছাড়েন ভারতী ঘোষ। পথে ঝেঁতলায় শশীভূষণ উচ্চ বিদ্যালয়ে পৌঁছলে সেখানে ফের এক বার তৃণমূল কর্মীদের ব্যপক বিক্ষোভের মধ্যে পড়েন তিনি। বিক্ষোভের সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় ব্যপক বোমাবাজি। বুথ এবং বুথের চারপাশে মুড়ি-মুড়কির মতো বোমা পড়তে থাকে। প্রায় ৪০ মিনিট পর কেশপুর থানা থেকে র‌্যাফ এবং কমব্যাট বাহিনী গিয়ে ঘেরাওমুক্ত করে ভারতী ঘোষকে। সেখান থেকে তিনি রওনা হন মেদিনীপুরের দিকে।

বিকেল ৪টে নাগাদ মেদিনীপুর শহরে ঢোকার মুখে ধর্মার মোড়ে তাঁর জন্য অপেক্ষা করছিল বিশাল পুলিশ বাহিনী। গার্ডরেল দিয়ে রাস্তা আটকে থামানো হয় ভারতীর কনভয়। সেখানে ছিলেন দু’জন ডেপুটি পুলিশ সুপার পদমর্যাদার আধিকারিক। তাঁরা কনভয় আটকে ভারতীর নিরাপত্তারক্ষীদের গাড়ি থেকে নামতে বলেন। সেখানে তাঁরা ওই আধিকারিককে কেশপুরের দোগাছিয়ায় গুলি চালানোর প্রসঙ্গে প্রশ্ন করেন।

তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ, দোগাছিয়ায় ভারতীর সিআইএসএফ নিরাপত্তারক্ষীরা জনতা লক্ষ্য  করে গুলি চালায়। তৃণমূলের দাবি কমপক্ষে পাঁচ রাউন্ড গুলি চালান ভারতীর নিরাপত্তারক্ষীরা। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের সভাপতি অজিত মাইতির দাবি, সেই গুলিতে জখম হয়েছেন স্থানীয় যুব তৃণমূল নেতা বক্তিয়ার খান। তাঁর ডান হাতে গুলি লেগেছে। তার ভিত্তিতে কেশপুর থানাতে অভিযোগও দায়ের করা হয় তৃণমূলের পক্ষ থেকে। তৃণমূল প্রার্থী দেবও বক্তিয়ারের বাড়িতে যান এ দিন।

অন্য দিকে কেশপুরের পিকুরদাতে ২০৬ এবং ২০৭ নম্বর বুথে সশস্ত্র নিরাপত্তারক্ষী-সহ বুথের ১০০ মিটারের মধ্যে ঢোকা এবং বুথে কমিশনের নিয়ম ভেঙে মোবাইলে ভিডিয়ো করার জন্য ভারতীর বিরুদ্ধে এফআইএর-র নির্দেশ দেয় নির্বাচন কমিশন।

কিন্তু ধর্মার মোড়ে তাঁকে আটকানোর সময় উপস্থিত পুলিশের কর্তারা স্পষ্ট ভাবে জবাব দিতে পারেননি কোন কারণে অর্থাৎ তৃণমূলের করা অভিযোগের ভিত্তিতে নাকি কমিশনের করা এফআইআরের ভিত্তিতে তাঁকে আটক করা হয়েছে।

ভারতীর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সিআইএসএফের বাহিনীর নেতৃত্বে রয়েছেন ডেপুটি কমান্ডান্ট পদমর্যাদার অফিসার পবণ কুমার। তাঁকে পুলিশ গুলি চালানোর বিষয়ে প্রশ্ন করে। তবে পাল্টা ভারতী বলেন, ‘‘যদি কোনও অভিযোগ হয়ে থাকে, তবে তার ভিত্তিতে এফআইআর হবে। পুলিশ তদন্ত করবে। গুলি মিলিয়ে দেখা হবে। তার সঙ্গে আমাকে আটকে রাখার কি সম্পর্ক? আমি তো প্রার্থী। আমাকে তো বিভিন্ন বুথে যেতে হবে। আমি তো গুলি চালাইনি।” তাঁর অভিযোগ, তিনি যাতে পিংলা যেতে না পারেন তাই পরিকল্পনামাফিক তাঁর গাড়ি আটকে রেখেছে পুলিশ।

বেলা সাড়ে চারটে পর্যন্ত ভারতীর কনভয় আটকে থাকে এবং কার্যত অচলাবস্থা তৈরি হয়। পাশাপাশি ধর্মার মোড়ে ভিড় বাড়তে থাকে। জড় হতে থাকেন তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা। বাড়তে থাকে উত্তেজনা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *